নিজ গ্রামের দিনমজুরদের পাশে দাঁড়ালেন দেশের আলোচিত ‘জামিলা কসাই’
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সারাদেশের মানুষ এখন ঘরবন্দি। থমকে গেছে সকল কার্যক্রম। এতে মহাবিপদে পড়েছেন দেশের দিনমজুর ও খেটে খাওয়া মানুষগুলো। এমন অবস্থায় কোথাও কাজ পাচ্ছে না তারা। এতে আয়-রোজগার বন্ধ হয়ে গেছে তাদের। অনেক কষ্টে অনাহারে-অর্ধাহারে চলছে তাদের সংসার। তবে কঠিন এ অবস্থা দ্রুত কাটিয়ে তুলতে সরকার ইতোমধ্যে ৬৪ জেলায় ব্যাপক ত্রাণ সহায়তা করছে। সরকারের পাশাপাশি দেশের বড় বড় অনেক শিল্পপ্রতিষ্ঠানও নেমেছে দিনমজুর শ্রেণির মানুষকে সহযোগিতা করতে। অনেকে ব্যক্তি উদ্যোগেও শুরু করেছেন খাদ্র সামগ্রী বিতরণ।
তেমনি একজন নারী হলেন, দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার ঝাড়বাড়ি এলাকার দেশের বাসিন্দা দেশের আলোচিত একমাত্র নারী কসাই জামিলা বেগম। বুধবার (০১ এপ্রিল) সকালে তিনি নিজ গ্রামের খেটে খাওয়া ৪০টি পরিবারের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছেন। দিয়েছেন চাল, ডাল, তেল, ও আলু। এসময় তার বড় ছেলে জহিরুল ইসলাম সঙ্গে ছিলেন।
২০ বছর আগে স্ত্রী-সন্তানদের রেখে চলে যান জামিলা বেগমের স্বামী। শুরু হয় সংসারে অভাবে। কোনোভাবেই অভাবের সঙ্গে টিকতে পারছিলেন না তিনি। বাধ্য হয়ে সন্তানদের নিয়ে চলে যান বাবার বাড়ি দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার ঝাড়বাড়ি এলাকায়। কিছুদিন বাবার সংসারে থাকার পর কোনো কাজ না পেয়েয় শুরু করেন এক ব্যতিক্রম যুদ্ধ। হাতে তুলে নেন কসাইয়ের কাজ। গড়ে তোলেন মায়ের দোয়া মাংস ভান্ডার। সেই থেকে আজ পর্যন্ত তাকে আর পেছনে ফিরে তাকে হয়নি। এখন তার পরিবার স্বচ্ছল। সন্তানদের নিয়ে ভালো আছেন তিনি।
অসহায়দের সহযোগিতা করা প্রসঙ্গে জামিলা বেগম বলেন, আমি আমার অতীতকে ভুলে যাইনি। আমি জানি একটা পরিবারের ইনকাম না থাকলে তাদের কি করুণ পরিণতি হয়। আমি নিজেও এসবের ভুক্তভোগী। কঠিন পরিশ্রম করে আজকে আমি সন্তানদের নিয়ে নিজের পায়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছি। ৪০ জন মানুষকে চাল, ডাল, তেল, আলু দেয়ার সামর্থ্য আল্লাহ আমাকে দিয়েছে, তাই আমি দিয়েছি। আগামীতেও আমি আমার এলাকার অসহায় গরিব মানুষের পাশে থাকব ইনশাল্লাহ। সবাই আামর জন্য দোয়া করবেন।
মায়ের এ কাজে ব্যাপক খুশি জামিলা বেগমের বড় ছেলে জহিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমার মায়ের কষ্ট আমি নিজ চোখে দেখেছি। আজ আল্লাহ আমাদের স্বচ্ছল করেছেন। এজন্য আমরা এলাকার মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আপনারাও নিজ নিজ এলাকার অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ান।
তথ্য প্রেরক : জাকির হোসেন, বীরগঞ্জ, দিনাজপুর।
এমএএস/এমএস