করোনা মোকালিবায় দরিদ্রদের জন্য দেশে প্রথম ‘মানবতার ঘর’
দেশে করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে গত ২৬ মার্চ থেকে অনানুষ্ঠানিক লকডাউন চলছে। ফলে কাজকর্ম বন্ধ থাকায় শ্রমজীবী মানুষ বেকার হয়ে অনেকটা অসহায় জীবনযাপন করছেন। এসব নিম্নআয়ের অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য দেশে প্রথমবারের মতো সিলেট নগরে তৈরি হলো ‘মানবতার ঘর’।
খাদ্য ও বস্ত্র নিয়ে কারও বাসায় নয়, রাখা থাকবে একটি ছোট ঘরে। এখানে রাখা খাদ্য ও কাপড় নিজ দায়িত্বে নিয়ে যেতে পারবেন যেকোনো হতদরিদ্র। এমন ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে ন্যাশনাল প্রেস সোসাইটি (গণমাধ্যম ও মানবাধিকার সংস্থা) সিলেট বিভাগীয় শাখা।
সংগঠনটি নগরের ২৪নং ওয়ার্ডের হাজী হালু মাঝি জামে মসজিদের সামনে ‘মানবতার ঘর’ নামে এক ব্যতিক্রমী ঘর চালু করেছে। ঘর থেকে যার খাদ্য ও বস্ত্রের প্রয়োজন তিনিই প্রয়োজনীয় খাদ্য ও পোশাক নিয়ে যেতে পারবেন।
ন্যাশনাল প্রেস সোসাইটি (গণমাধ্যম ও মানবাধিকার সংস্থা) সিলেট বিভাগীয় শাখার উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত এ মানবতার ঘর মঙ্গলবার উদ্বোধন করা হয়।
সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এখানে রাখা থাকবে একেকটি খাদ্যের প্যাকেটে দুই কেজি চাল, আধা কেজি ডাল, আধা কেজি পেঁয়াজ, আধা লিটার তেল, এক কেজি লবণ ও দুই কেজি আলু। খাদ্যসামগ্রীর পাশাপাশি রাখা থাকবে বিভিন্ন ধরনের কাপড়। যেকোনো হতদরিদ্র নিয়ে যেতে পারবেন এসব সামগ্রী।
বুধবার সন্ধ্যায় সংগঠনের সিলেট বিভাগীয় কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ জুম্মান বলেন, মানবতার ঘর প্রাথমিকভাবে নগরের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডেই চালু করেছি। পর্যায়ক্রমে নগরের প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে চালু করব। যে কেউ এখানে খাবার ও কাপড় রাখতে পারবেন। আমরা হতদরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য এটা তৈরি করেছি। সমাজের বিত্তবান মানুষজন হতদরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য এই উদ্যোগে আমাদের সহযোগিতা করবেন বলে প্রত্যাশা করি।
তিনি আরও বলেন, কেউ খাদ্য ও কাপড় (নতুন কিংবা পুরাতন) দিতে চাইলে বাসা থেকে সংগ্রহ করব। এজন্য মোবাইল (০১৭১৬ ৫৪৩১০৯) ও (০১৯৭১ ৩৯৯১০৯) নম্বরে যোগাযোগ করার জন্য বলা হয়েছে।
মোহাম্মদ জুম্মান বলেন, যেহেতু করোনাভাইরাস ছোঁয়াচে সেজন্য এটি সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হয়। আর ত্রাণ বিতরণে বর্তমানে লোকসমাগম করা ঠিক নয় বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। ছোঁয়াচে এই রোগের আতঙ্কে অনেকেই বাসায় গিয়ে ত্রাণ বিতরণ করতেও ভরসা পান না। সব মিলিয়ে কঠিন সময় যাচ্ছে। এই সময়ে এমন উদ্যোগ অসহায় মানুষের কাজে আসবে।
ছামির মাহমুদ/এএম/এমএস