নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে পহেলা বৈশাখে জাটকা বিক্রির মহোৎসব

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি লক্ষ্মীপুর
প্রকাশিত: ০৩:৪৫ পিএম, ১৪ এপ্রিল ২০২০

বাঙালির প্রাণের উৎসব পয়লা বৈশাখ উদযাপনের অন্যতম অনুষঙ্গ পান্তা-ইলিশ। তবে এবার সেই ঐতিহ্য স্তব্দ হয়ে গেছে করোনাভাইরাসের তাণ্ডবে।

সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী এবার প্রতি ঘরেই বৈশাখ উৎসব পালন করা হচ্ছে। আবার জাটকা সংরক্ষণে মেঘনা নদীতে নিষেধাজ্ঞা চলছে। কিন্তু লক্ষ্মীপুরের বিভিন্ন মাছের ঘাটে দেখা গেছে জাটকা বিক্রির ধুম। এজন্য মৎস্য বিভাগ ও কোস্টগার্ডের দায়সারা কাজকে দোষারোপ করছেন সচেতন মহল।

এদিকে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব কমাতে লক্ষ্মীপুরে লকডাউন চলছে। ঘরে থাকতে বলা হয়েছে মানুষকে। বাজারে গেলেও নিরাপদ দূরত্বে থাকার জন্য বলা হয়েছে। হাটবাজারে দোকানের সামনে সুরক্ষা বৃত্ত এঁকে দিয়েছে প্রশাসন। কিন্তু কে শুনে কার কথা!

জেলার রায়পুর উপজেলার উত্তর চরবংশী খাসেরহাট বাজারে মঙ্গলবার (১৪ এপ্রিল) সকালের চিত্র দেখে মনে হয়েছে মাছের মেলা বসেছে। একজনের গায়ের সঙ্গে অন্যজনের গা লেগে আছে। মনে হচ্ছে যেন প্রশাসনের অনুমতি পেয়ে জাটকার মেলা বসেছে। জাটকা শিকারে নিষেধাজ্ঞা আর করোনা ক্রান্তিকালে সঙ্গরোধে থাকতে হলেও প্রশাসন এ নিয়ে কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ সবার। মেঘনা উপকূলীয় এলাকার প্রত্যেকটি ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসন জাটকা সংরক্ষণে দায়িত্ব পালনের কথা ছিল। কিন্তু এখানে চিত্র ভিন্ন। প্রশাসনও রয়েছে চুপচাপ।

স্থানীয়দের অভিযোগ, কোস্টগার্ডের দায়সারা কাজের কারণে চরভৈরবের রুহুল আমিন মেম্বারের তত্ত্বাবধানে একটি সিন্ডিকেট মাছ শিকার করছেন। সিন্ডিকেটে রায়পুরের মেঘনা নদীর চরগজারিয়া গ্রামের রুবেল মাঝি ও শাহ আলম মাঝি জড়িত রয়েছেন। নদীতে মাছ শিকারের পর একটি ভাগ কোস্টগার্ডকে দেয়া হয়।

Lakshmipur-Raipur

স্থানীয় প্রশাসনের দায়িত্বশীল এক ব্যক্তি জানান, সরকারি নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন নদীতে মাছ শিকারের দায়ে কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড এবং উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে। সেক্ষেত্রে সরকারি নিষেধাজ্ঞা জারি করতে মৎস্য বিভাগ, কোস্টগার্ড, পুলিশ প্রশাসনের পাশাপাশি নদী এলাকার কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেয়া হয়। কিন্তু এই দায়িত্ব কেউই ঠিকমতো পালন করেন না। সবাই দায়সারাভাবে কাজ করছেন। চলতি পথে কাউকে মাছ ধরতে দেখা গেলে শুধু তাদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেয়া হয়।

উত্তর চরবংশী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল হোসেন বলেন, খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গেছি। কিন্তু কাউকে খুঁজে পাইনি। জেলেরা ভোরে মাছ বিক্রি করে পালিয়েছেন। ইউপি মেম্বার ও চৌকিদারদের নিয়ে বৈঠক করব এ ব্যাপারে সতর্ক থাকার জন্য। চাঁদপুরের চর ভৈরবের রুহুল আমিন মেম্বারসহ একটি সিন্ডিকেটের নৌকা রায়পুরে ঢুকে মাছ শিকার করে বলে নিশ্চিত হয়েছি।

রায়পুরের হায়দরঞ্জ ক্যাম্পের কন্টিজেন্ট কমান্ডার (সিসি) আবদুর রহমান বলেন, জাটকা সংরক্ষণে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। কার নৌকা কখন মাছ শিকার করতে যায়, সেটা আমরা জানি না। অভিযান চালিয়ে যাকেই নদীতে দেখতে পাই, সঙ্গে সঙ্গে তাকেই আটক করা হয়। বাজারে জাটকা বিক্রি ও করোনা প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে আমরা ছাড়াও কাজ করার কথা পুলিশ প্রশাসনের।

কাজল কায়েস/এএম/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।