ঝালকাঠিতে মাথা ন্যাড়ার হিড়িক

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ঝালকাঠি
প্রকাশিত: ০৫:৪০ পিএম, ১৪ এপ্রিল ২০২০

ঝালকাঠিতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং বিনা প্রয়োজনে বাইরে ঘোরাফেরা বন্ধ করতে পুলিশসহ যৌথ বাহিনীর তৎপরতায় অঘোষিত লকডাউন চলছে। এতে নরসুন্দরদের দোকান বন্ধ।

চুল কাটাতে না পারায় জেলা শহরের পাড়া-মহল্লাসহ প্রতিটি উপজেলার গ্রামগঞ্জে মাথা ন্যাড়ার হিড়িক পড়েছে। বিশেষ করে কিশোর ও যুবকদের মধ্যে এই প্রবণতা বেশি লক্ষ্য করা গেছে।

শুধু ন্যাড়া হয়েই থামেননি তারা; নানা ভঙ্গিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ন্যাড়া মাথার ছবি পোস্ট করছেন। করোনা নিয়ে আতঙ্কের মধ্যে এমন দৃশ্যে কৌতূহলের সৃষ্টি হলেও যারা ন্যাড়া হয়েছেন তারা বলছেন, সরকারের নির্দেশে ঘরবন্দি, সেলুনও বন্ধ। তাই মাথার চুল বড় হওয়ায় ন্যাড়া হয়েছি।

আবার অনেকেই বলছেন, নিছক মনের বাসনা কিংবা ভালো লাগা থেকেই তারা ন্যাড়া হয়েছেন। পাশের বা পরিচিত কারও ন্যাড়া হওয়া দেখে তিনিও উৎসাহিত হয়েছেন।

সম্প্রতি ন্যাড়া হওয়াদের মধ্যে কিশোর ও যুবকদের পাশাপাশি বেশ কয়েকজন সংবাদকর্মী, সাংস্কৃতিক কর্মী, ছাত্রলীগ নেতা, চাকরিজীবী, শ্রমজীবীসহ অনেকেই রয়েছেন। যাদের বেশির ভাগই ন্যাড়া হওয়ার পর কোনো না কোনো ভঙ্গিতে ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেছেন।

গরমের সময়টাতে প্রতি বছরই গ্রুপ বেঁধে একই বয়সের কিশোর-যুবকদের ন্যাড়া হওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে। যদিও এখন ন্যাড়া হওয়া যুবকরা বলছেন, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকারের নির্দেশে তাদের গৃহবন্দি থাকতে হচ্ছে। যে যার মতো নিজ বাড়িতে থাকছেন, কবে নাগাদ বাইরে বের হতে পারবেন এবং স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবেন তা কারও জানা নেই। এমন সুযোগে মাথা ন্যাড়া করেছেন।

ঝালকাঠি শহরের পূর্বচাঁদকাঠি এলাকার বাসিন্দা ও সদর উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক মাইনুল ইসলাম খান বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে বাড়ির সবাই ঘরে আছেন। দিনের বেলা ঘর থেকে বের হয়ে বাইরে কোথাও যাচ্ছেন না। বাড়িতেও কেউ আসছেন না। এই সুযোগে সমবয়সী কয়েকজন মিলে মাথা ন্যাড়া করেছি।

মেহেদি হাসান বলেন, চুল বড় হয়ে গেছে। সেলুন বন্ধ থাকায় চুল কাটার সুযোগ নেই। তার ওপর গরম বেড়েছে। ফলে এক স্বজনের সহায়তায় মাথা ন্যাড়া করেছি।

একই কথা জানিয়ে নলছিটি উপজেলার কামদেবপুর গ্রামের বাসিন্দা গাজী ইব্রাহিম বলেন, আমাদের গ্রামের অর্ধশত কিশোর ও যুবক মাথা ন্যাড়া করেছেন।

ঝালকাঠি জেলার নরসুন্দররা জানান, দীর্ঘদিন সেলুন বন্ধ থাকায় নরসুন্দররা খুব কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। কিন্তু সেলুনে সামাজিক দূরত্ব কোনোভাবেই নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। নরসুন্দরদের সাধারণ মানুষদের স্পর্শ করেই চুল কাটা কিংবা সেভ করার কাজটি করতে হয়। সেখানে যদি কেউ করোনায় আক্রান্ত থাকেন, তাহলে ওই নরসুন্দরসহ পরে সেলুনে আসা বহু লোক আক্রান্ত হতে পারেন। এই চিন্তা থেকে সরকারি নির্দেশনা মেনে গত ২৫ মার্চ থেকে গোটা ঝালকাঠি জেলায় সেলুন বন্ধ করা হয়েছে।

আতিকুর রহমান/এএম/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।