দাফন না করে পালালেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পাঁচ আলেম
করোনা উপসর্গে মৃত ব্যক্তির লাশ দাফন না করে পালালেন জেলা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পাঁচ আলেম। আজ বুধবার বিকেলে মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলায় ঘটনাটি ঘটে। পরে মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ওসি (তদন্ত) লাশের দাফন কাজ সম্পন্ন করেন।
দুপুরে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে জ্বর, ঠান্ডা, কাশি নিয়ে ইদ্রিস আলী (৩৫) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। মারা যাওয়া ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। ইদ্রিস আলীর বাড়ি মুজিবনগর উপজেলার ভবের পাড়া গ্রামে।
মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার উসমান গনি জানান, মেহেরপুর জেলা ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত ব্যক্তিদের দাফন-কাফনে মুজিবনগরের জন্য আলেমদের নিয়ে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর আগে একদিন আমার অফিসে ডেকে তাদের ব্রিফিং করা হয়েছে।

মৃত ব্যক্তির দাফন-কাফনের জন্য আজ ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক গঠিত পাঁচজনসহ মোট ছয়জন আলেমকে ডাকা হয়। করোনা উপসর্গে মৃত্যুর কথা শুনে পাঁচজন সদস্যই অপারগতা প্রকাশ করেন। তারা বলেন. ‘আগে থেকে তাদের বলা হয়নি করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিকে দাফন করতে হবে।’ আমি তাদের অনেক বুঝানোর চেষ্টা করলাম, যে ব্যক্তি মারা গেছেন তিনি হয়তো করোনা আক্রান্ত না, শুধু সন্দেহের কারণে স্যাম্পল পাঠানো হয়েছে। তাছাড়া এই কমিটি তো শুধু করোনার কারণে মৃত্যু বা করোনা সন্দেহে মৃত ব্যক্তিদের দাফনের জন্য গঠিত হয়েছে। কিন্তু নানা অজুহাতে তারা একজন-দুজন করে আমার কক্ষ ত্যাগ করে চলে যান। আমরা তখন খুব বিপদে পড়ে যাই।
পরে আমি এবং উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রেজওয়ান আহমেদ ও থানার ওসি (তদন্ত) শরিফুল ইসলামসহ তিনজন লাশ দাফনের সিদ্ধান্ত নেই। আলেমদের জন্য আনা পিপিই স্থানীয় মৃত ব্যক্তির আত্মীয়দের মধ্য থেকে চার যুবককে পরানো হয়।
জানাজা পড়ানোর জন্য আমরা নিজেরাই প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। কিন্তু শেষ মুহূর্তে গোপালনগর জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা তৌহিদুল ইসলাম এসে জানাজায় ইমামতি করেন। অবশেষে আমরা তিনজন কর্মকর্তা ও পাঁচজন যুবক মিলে লাশ দাফনের কাজ শেষ করি।
তিনি আরো বলেন, শুধু একটি বিষয় অজানা রইলো পাঁচজন আলেম আমাদের কী শিক্ষা দিয়ে গেলেন তা বুঝতে পারলাম না।
আসিফ ইকবাল/এফএ/এমকেএইচ