ভেবেছিলাম আর বাঁচব না, চিকিৎসকদের সেবায় বেঁচে গেছি

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি বরগুনা
প্রকাশিত: ০৪:৪৮ পিএম, ২৪ এপ্রিল ২০২০

বরগুনায় করোনাভাইরাস থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন বৃদ্ধসহ দুজন। বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়েছেন তারা। তাদের দুজনের বাড়ি বরগুনা সদর উপজেলায়। দুজনের মধ্যে একজনের বয়স ৬২ বছর এবং অন্যজনের বয়স ৩৫।

করোনাভাইরাস থেকে সুস্থ হওয়ায় ওই দুই ব্যক্তিকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক-নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। শুক্রবার (২৪ এপ্রিল) দুপুর ২টার দিকে হাসপাতালের নিজস্ব গাড়িতে ওই দুই ব্যক্তিকে বাড়ি পৌঁছে দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, ৬২ বছরের ওই বৃদ্ধ তাবলিগ জামাতে ঢাকায় অবস্থানকালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বরগুনায় আসেন। ৩৫ বছরের ওই যুবক নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুরে কর্মরত থাকা অবস্থায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন। এরপর তিনি বরগুনায় আসেন।

borguna-(1)

গত ১১ এপ্রিল সন্ধ্যায় করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হিসেবে শনাক্ত হন তারা। পরে তাদের বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসা দেয়া হয়।

বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডের প্রধান জুনিয়র কনসালট্যান্ট চিকিৎসক কামরুল আজাদ বলেন, যথাসময়ে চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা পাওয়ায় তারা দুজন দ্রুত সুস্থ হয়েছেন। তারা আরও আগেই সুস্থ হয়েছেন। তাদের সবশেষ রিপোর্ট আসতে দেরি হওয়ায় দেরিতে হাসপাতাল থেকে বাড়ি পাঠানো হয়। রিপোর্ট এলে আরও কয়েকদিন আগে তাদের বাড়িতে পাঠাতে পারতাম।

তিনি আরও বলেন, উপসর্গ অনুযায়ী আমরা তাদের চিকিৎসা দিয়েছি। আমাদের সাধ্য অনুযায়ী তাদের সংস্পর্শে থেকে চিকিৎসা দিয়েছি। তবে আমরা সব থেকে বেশি যা করেছি, তা হলো তাদের মানসিকভাবে সাহস জুগিয়েছি। তাদের ভেঙে পড়তে দেইনি। সবসময় উৎসাহ দিয়েছি।

করোনাভাইরাস থেকে সুস্থ হওয়া বৃদ্ধ বলেন, আক্রান্ত হওয়ার খবর পেয়ে আমি খুব ভয় পেয়েছিলাম। ভেবেছিলাম আর বাঁচব না। কিন্তু চিকিৎসকদের সেবায় বেঁচে গেছি।

borguna-(2)

তিনি আরও বলেন, ‘আমি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর স্বজনরা দূরে সরে যায়। যেসব স্বাস্থ্যকর্মী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমার সংস্পর্শে এসেছেন, আমাকে চিকিৎসা দেয়ার পাশাপাশি সাহস জুগিয়েছেন, তাদের আমি ধন্যবাদ জানাই। নতুন জীবন পাওয়ায় আমি চিকিৎসকদের কাছে ঋণী।’

বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মো. সোহরাব উদ্দিন বলেন, আমরা চেষ্টা করেছি রোগীদের সাধ্যমতো সেবা দেয়ার। করোনাভাইরাসের নির্দিষ্ট চিকিৎসা না থাকলেও লক্ষণ দেখে আমরা চিকিৎসা দিয়েছি। সার্বক্ষণিক তাদের নজরদারিতে রেখেছি। এসব কারণে আমরা দুজনকে সুস্থ করে তুলতে সক্ষম হয়েছি। এই কৃতিত্ব বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের সব চিকিৎসক, টেকনোলজিস্ট, ওয়ার্ড ইনচার্জ এবং নার্সসহ সব স্বাস্থ্যকর্মীর।

বরগুনায় এখন পর্যন্ত ২৩ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে দুজন নারী এবং অন্যরা পুরুষ। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন দুজন।

সাইফুল ইসলাম মিরাজ/এএম/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।