২৫ দিনেও আসেনি ২৪ করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি মৌলভীবাজার
প্রকাশিত: ০৪:৫৬ পিএম, ০১ মে ২০২০
প্রতীকী ছবি

২৫ এপ্রিল সকালে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে করোনার লক্ষণ নিয়ে মারা যান শ্রীমঙ্গল উপজেলার রামনগর এলাকার ৬৫ বছরের এক বৃদ্ধা। সেদিনই তার নমুনা সংগ্রহ করে করোনা পরীক্ষার জন্য সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের ল্যাবে পাঠানো হয়।

একই সঙ্গে মৃতের পরিবারের সবাইকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়। কিন্তু এখনও ওই নারীর রিপোর্ট আসেনি। যার কারণে আতঙ্কের মধ্যে আছেন তার পরিবারের সদস্যরা। এখন সামাজিকভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন তারা।

শুধুই ওই নারী নন, মৌলভীবাজার থেকে চলতি মাসের শুরুর দিকে করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা পাঠানো হয়েছে এমন অনেক নমুনার রিপোর্ট আসেনি। ১০ থেকে ১৪ দিন আগে নমুনা পাঠানো হয়েছে এমন সংখ্যা প্রায় দুই শতাধিক।

চলতি মাসের প্রথম ছয়দিনে সিলেটে করোনা পরীক্ষার ল্যাব স্থাপনের আগে ঢাকায় ৬৮টি নমুনা পাঠানো হয়। এর মধ্যে ২৪টির রিপোর্ট এখনও আসেনি। ২৫ দিনেও রিপোর্ট না আসায় ভোগান্তিতে পড়েছেন নমুনা প্রধানকারীরা। এসব কারণে দৃশ্যমান হচ্ছে না মৌলভীবাজারের করোনা পরিস্থিতি।

জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের পরিসংখ্যান কর্মকর্তা অহিজিত দাস বলেন, আজ পর্যন্ত ৫৬৩টি নমুনা ঢাকা এবং সিলেট পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে ফলাফল পাওয়া যায়নি ২৬৪টির। সেগুলার জন্য আমরা অপেক্ষা করছি। শুরুর দিকে ঢাকায় পাঠানো হলেও গত ৭ এপ্রিল সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবে করোনাভাইরাস পরীক্ষা ল্যাব চালু হওয়ার পর থেকে তা সিলেট পাঠানো হচ্ছে। কিন্তু রিপোর্ট আসছে ধীরগতিতে। এর মধ্যে এই মাসের ২ তারিখ থেকে ৬ তারিখ পর্যন্ত ৬৮টি নমুনা পাঠানো হয়েছে ঢাকায়। যার মধ্যে ২৪টির রিপোর্ট এখনও আসেনি।

মৌলভীবাজার সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সূত্র জানায়, রাজনগরে উপজেলায় গত ৪ এপ্রিল পান-সিগারেটের দোকানদার জেলায় প্রথম করোনা আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হন। পরে তিনি মারা যান। এ পযর্ন্ত জেলায় আক্রান্ত ১৩ জন। মারা গেছেন দুইজন। তার মধ্যে একজন মৌলভীবাজারের বাসিন্দা হলেও তিনি ঢাকায় করোনায় আক্রান্ত হন এবং পরে মারা যান।

মৌলভীবাজারের বর্তমান রিপোর্টগুলা আসছে সিলেট থেকে। রিপোর্টের ধীরগতির কারণ খুঁজতে গিয়ে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাব সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, সিলেট বিভাগের বিভিন্ন উপজেলা থেকে প্রতিদিন এই ল্যাবে প্রায় ৪৫০টি করে নমুনা আসে। এর মধ্যে প্রতিদিন গড়ে ১৫০টির মতো নমুনা পরীক্ষা হয়।

পরীক্ষার দীর্ঘসূত্রতার কারণে বিভাগের বিভিন্ন স্থান সিলেটের বাইরের ল্যাবেও নমুনা পাঠানো হচ্ছে। এর মধ্যে ঢাকায় পরীক্ষায় হবিগঞ্জের ২০ জনের করোনা শনাক্ত হয়। সোমবার ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের ল্যাবে সুনামগঞ্জের ধর্মপাশার দুইজনের করোনা শনাক্ত হয়। এরই মধ্যে প্রায় এক হাজার নমুনা পরীক্ষার জন্য সিলেট থেকে ঢাকা পাঠানো হয়েছে।

মৌলভীবাজারের সিভিল সার্জন ডা. তউহীদ আহমদ কল্লোল বলেন, আমরা বেশ কিছুদিন ধরে নমুনার ফলাফলের অপেক্ষায় রয়েছি। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে সিলেটে প্রচুর চাপ। যদিও আমাদের বলে দেয়া হয়েছে রিপোর্ট পজেটিভ এলে সঙ্গে সঙ্গে জানানো হবে। নেগেটিভ এলে অনেক সময় নাও জানানো হতে পারে।

রিপন দে/এএম/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।