রাজশাহী কারাগারের ৩৩ কয়েদির সাজা মওকুফ
করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে চাপ কমাতে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের ৩৩ জন কয়েদির সাজা মওকুফ করে দিয়েছে সরকার। ইতোমধ্যে ১৭ জনকে কারাগার থেকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। রোববার (৩ মে) রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার গিয়াস উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মুক্তি পাওয়া ব্যক্তিরা লঘু অপরাধে বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত। কারাগারের ভিড় কমাতে সরকার এসব কয়েদির সাজা মওকুফ করেছে বলে জানিয়েছে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার কর্তৃপক্ষ।
রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার গিয়াস উদ্দিন বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে কারাগারগুলোতে ভিড় কমাতে সরকার লঘু অপরাধে সাজাপ্রাপ্তদের সাজা মওকুফ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ রকম বন্দিদের তালিকা কিছুদিন আগে কারা অধিদফতর আমাদের কাছ থেকে নিয়েছিল। সারা দেশ থেকে তালিকা পাওয়ার পর প্রথম পর্যায়ে দুই হাজার ৮৮৪ জনকে ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রথম পর্যায়ে রাজশাহীর ৩৩ জন কয়েদিকে ছেড়ে দেয়ার জন্য শনিবার (০২ মে) চিঠি পেয়েছি। যাদের কারাদণ্ডের মেয়াদ এক বছর কিন্তু ছয়মাস বা তারও বেশি সাজা খেটেছেন এ রকম কয়েদিদের সাজা মওকুফ করা হয়েছে। ৩৩ জনের মধ্যে শনিবার সন্ধ্যায় ১৭ জনকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। বাকিরাও চলে যাবেন দু’একদিনের মধ্যে। যে মামলায় সাজা হয়েছিল সে মামলায় তাদের আর কারাগারে যাওয়া লাগবে না।
কারাগারের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, সরকার শুধুমাত্র কারাদণ্ড মওকুফ করেছে। তবে জরিমানা মওকুফ নয়। অনেকের মামলার রায় ঘোষণার সময় কারাদণ্ডের পাশাপাশি অর্থদণ্ড দিয়ে থাকেন আদালত। যাদের অর্থদণ্ড ছিল না, তাদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে। আর ১৬ জনের অর্থদণ্ড পরিশোধ করা নেই বলে তারা যেতে পারছেন না। এখন ব্যাংক খোলা আছে, বন্দিদের স্বজনরা টাকা জরিমানার টাকা জমা দিলেই বাকি ১৬ জনকে ছেড়ে দেয়া হবে।
জেল সুপার আরও বলেন, পরিবারের সদস্যদের ফোন করে জরিমানার অর্থ পরিশোধ করতে বলা হয়েছে। এই ধরনের মুহূর্তে প্রতারকদের অন্য বন্দিদের স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করে টাকা চাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই বন্দির স্বজনদের সতর্ক থাকতে হবে। কেউ টাকা চাইলেই দেয়া যাবে না। কারা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি নিশ্চিত হয়েই যেন তারা ব্যাংকে টাকা দেন।
উল্লেখ্য, রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের ধারণক্ষমতা এক হাজার ৪৫০ জনের। কিন্তু রোববার এই কারাগারে হাজতি এবং কয়েদি মিলিয়ে বন্দীর সংখ্যা তিন হাজার ৬১০ জন। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে ঝুঁকি কমাতে আরও দুই দফায় এখান থেকে বন্দিদের মুক্তি দেয়া হবে বলে জানায় কারা কর্তৃপক্ষ।
ফেরদৌস সিদ্দিকী/এএম/এমকেএইচ