করোনায় জমজমাট ঈদবাজার
বিধি-নিষেধের তোয়াক্কা না করেই জমে উঠেছে সাতক্ষীরার ঈদবাজার। সরকারি সিদ্ধান্তের পর সাতক্ষীরায় আট শর্ত দিয়ে ব্যবসায়ীদের সীমিত পরিসরে দোকানপাট খোলার সিদ্ধান্ত দেয় প্রশাসন।
গতকাল রোববার (১০ মে) থেকে দোকানপাট খোলার সিদ্ধান্ত দেয় স্থানীয় প্রশাসন। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত সীমিত পরিসরে পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত দোকানপাট খোলার কথা বলা হয়। তবে জুড়ে দেয়া আট শর্ত। এর একটিও মানছেন না ক্রেতা-বিক্রেতারা।
বিক্রেতারা বলছেন, আমরা নিরূপায় আর ক্রেতারা সচেতন নয়। অন্যদিকে ক্রেতা বলছেন, প্রশাসনিক কোনো নজরদারি নেই মার্কেটগুলোতে। এজন্য কেউ সচেতন নয়।
সোমবার (১১ মে) সাতক্ষীরা শহরের মার্কেটগুলো ঘুরে দেখা যায়, ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, জীবাণুনাশক ব্যবহার করা, মাস্ক ও হ্যান্ড গ্লাভস ব্যবহার করাসহ মোট আট শর্তের একটিও মানছেন না কেউ। করোনা পরিস্থিতিতে সারা বিশ্বের মতো গোটা বাংলাদেশ যখন আতঙ্কে তখন সাতক্ষীরায় কারও মাঝে নেই আতঙ্কের কোনো ছাপ। মার্কেটে ঢুকলে মনে হবে দেশে করোনা নামক কিছুই নেই।
সাতক্ষীরা শহরের আমতলা মোড় এলাকার বাসিন্দা শেখ সবুজ হোসেন বলেন, শহরে ঢুকে মার্কেটগুলো দেখলে মনেই হবে না দেশে করোনাভাইরাসের মহামারি চলছে। করোনা ঠেকাতে প্রধান শর্ত সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা। তবে কারও মাঝে সেই বিধি-নিষেধের বালাই নেই। উপচেপড়া ভিড় লেগেছে মার্কেটগুলোতে।
সোমবার বেলা ১১টার দিকে উপচেপড়া ভিড় ছিল সাতক্ষীরা সদর থানার পেছনে মিম গার্মেন্টসসহ রনি মার্কেটের সব দোকানে। বিধি-নিষেধের বালাই ছিল কারও মধ্যে।
মিম গার্মেন্টসের মালিক তাজুল ইসলাম বলেন, সরকারি যে আট শর্ত; সেগুলো আমরা মানছি। দোকানের সামনে স্বেচ্ছাসেবক রেখে দিয়েছি। কিন্তু ক্রেতারা কেউ সামাজিক দূরত্বের বিধি-নিষেধ মানছেন না। কেউ সচেতন নয়, আমরা কি করব?
তিনি বলেন, আমাদের করোনা পরিস্থিতির মধ্যে দোকান খুলে রাখাই ঠিক হয়নি। তবে কোনো উপায় নেই। কোটি টাকার গার্মেন্টস সামগ্রী পড়ে রয়েছে। ঈদকে কেন্দ্র করে আমাদের পূর্বপ্রস্তুতি থাকে। দোকান না খুললে ব্যবসায়ীরা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
শহরের বাসিন্দা মার্কেটের ক্রেতা ওবায়দুর রহমান বলেন, কেউ কোনো বিধি-নিষেধ মানছেন না। প্রশাসনের কোনো নজরদারি আমি দেখিনি। তবে অন্য কোথাও থাকতে পারে। সাতক্ষীরায় করোনা এখনও সেভাবে প্রভাব বিস্তার করেনি। তবে বিষয়টি জরুরিভাবে না দেখলে সাতক্ষীরায় করোনা মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মির্জা সালাউদ্দীন ও সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল বলেন, শপিংমলসহ বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের মালিকদের প্রতিষ্ঠানের সামনে হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখা, ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়কে মাস্ক পরা, হ্যান্ড গ্লাভস ব্যবহার করা, চার ফুট দূরত্বে ক্রেতাদের অবস্থান নিশ্চিত করা, পর্যাপ্ত স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ দেয়াসহ আটটি নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আট নির্দেশনা না মানলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
আকরামুল ইসলাম/এএম/পিআর