চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত ছিলেন, জানা গেল মৃত্যুর পর
জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে মারা যাওয়া সরকারি সদর (জেনারেল) হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট (চর্ম ও যৌন) চিকিৎসক এমদাদ উল্লাহ খানের (৫৮) করোনাভাইরাস পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে।
শনিবার (২০ জুন) রাত সাড়ে ৯টার দিকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাব থেকে জানানো হয় করোনায় আক্রান্ত ছিলেন চিকিৎসক এমদাদ উল্লাহ। অর্থাৎ করোনাভাইরাসে তার মৃত্যু হয়েছে।
বরিশালের সিভিল সার্জন মনোয়ার হোসেন বলেন, শনিবার রাতে পাওয়া রিপোর্টে জানা যায় মৃত চিকিৎসক এমদাদ উল্লাহ খান করোনায় আক্রান্ত ছিলেন। করোনায় তার মৃত্যু হয়েছে।
এর আগে শুক্রবার (১৯ জুন) বিকেল ৫টা ৩৫ মিনিটে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসক এমদাদ উল্লাহ খানের মৃত্যু হয়।
চিকিৎসক এমদাদ উল্লাহ খান পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার মজিদ আহম্মেদ খানের ছেলে। এমদাদ উল্লাহ পরিবার নিয়ে বরিশাল নগরীর অক্সফোর্ড মিশন রোডে বসবাস করতেন। তিনি দুই ছেলের জনক ছিলেন।
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. এসএম বাকির হোসেন বলেন, জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি হন চিকিৎসক এমদাদ উল্লাহ। শুক্রবার সকালে তার শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেলে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) স্থানান্তর করা হয়। ওই দিন বিকেল ৫টা ৩৫ মিনিটে সেখানে তার মৃত্যু হয়। পরে তার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য মেডিকেল কলেজের ল্যাবে পাঠানো হয়।
শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চর্ম ও যৌন রোগ বিভাগের প্রধান চিকিৎসক বিপ্লব কুমার দাস বলেন, চিকিৎসক এমদাদ উল্লাহ আমার পরিচিত। তিনি শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে তিনি হাসপাতালে নিয়মিত রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিয়ে আসছিলেন। চারদিন আগে তিনি জ্বরে আক্রান্ত হন। বিষয়টি জানতেন না তিনি। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে জ্বরের সঙ্গে তার শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। তিনি ডায়াবেটিসেও আক্রান্ত ছিলেন। এরপর বিকেলে তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছিল। শুক্রবার দুপুরে তার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়। বিকেলে সেখানে তার মৃত্যু হয়। করোনা ইউনিটে চিকৎসকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে ভর্তির পর তার এক্সে-রে করানো হয়েছিল। এক্সে-রে রিপোর্টে তার ফুসফুসে ইনফেকশন ধরা পড়ে।
চিকিৎসক বিপ্লব কুমার দাস বলেন, উপসর্গ দেখে আগে থেকে ধারণা করা হয়েছিল চিকিৎসক এমদাদ উল্লাহ খান করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তবে রাতে রিপোর্ট পাওয়ার পর তা নিশ্চিত হওয়া গেছে। এর আগে শনিবার সকালে স্বাস্থ্যবিধি মেনে তার মরদেহ নগরীর মুসলিম গোরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
বিপ্লব কুমার দাস আরও বলেন, রোগীদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে চিকিৎসক এমদাদ উল্লাহ খান আক্রান্ত হয়েছেন। তার উপসর্গ একটু দেরিতে দেখা দিয়েছে। চিকিৎসক হিসেবে তার সুনাম ছিল। তার মৃত্যুতে চিকিৎসকরা শোকাহত। করোনাকালে আমরা একজন যোদ্ধাকে হারালাম।
সাইফ আমীন/এএম