তিন মাসে একবারও পরিবারের কাছে যেতে পারেননি ওসি ফারুক
দুনিয়া জুড়ে রাজত্ব করছে করোনাভাইরাস। সময়ের পরিক্রমায় করোনা শনাক্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সে সংখ্যার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল। সংকটময় এই পরিস্থিতিতে সম্মুখে থেকে মুষ্টিমেয় কয়েকজন মানবসেবায় নিজেকে উজাড় করে দিচ্ছেন। নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর থেকে প্রতিনিয়ত মৃত্যুর ভয়কে উপেক্ষা করে দায়িত্ব পালন করছেন থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ফারুক।
করোনার সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর সেই মার্চ মাস থেকে এখনও তিনি তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে যাননি। এমনকি ঈদের দিনও যেতে পারেননি পরিবারের কাছে।
ঢাকার মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে ৫ম শ্রেণি পড়ুয়া ছেলে রাইয়ান ফারুক লামীমের আবদার ছিল একবারের জন্য হলেও বাবার সঙ্গে দেখা করার। কিন্তু তিনি সেই আবদার রাখতে পারেননি।
পুলিশ সদস্যরা যাতে নিরাপদে দায়িত্ব পালন করতে পারেন সেজন্য সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একাধিক উদ্যোগ নিয়েছেন ওসি কামরুল ফারুক। থানার পুলিশ সদস্যদের মাঝে একধিকবার সুরক্ষাসামগ্রী মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, সাবান, গ্লোবস ও পিপিই বিতরণ করেছেন। থানায় পুলিশ ছাড়াও অনেক মানুষের আনাগোনা থাকায় থানা ভবনের সামনে হাত ধোয়ার বেসিন স্থাপন করেছেন।
এরপরও করোনা বিস্তার রোধে কাজ করতে গিয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ১৬ পুলিশ সদস্য করোনায় আক্রান্ত হন। তারা সুস্থ হওয়ার পর তাদের উৎসাহ যোগাতে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়ে বরণ করা হয়।
ওসি কামরুল শুধুমাত্র থানার পুলিশদের জন্য কাজ করেই ক্ষান্ত হননি। তিনি এখনও সিদ্ধিরগঞ্জের অসহায় মানুষদের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। সরকারের তরফ থেকে যেসব খাদ্য সামগ্রী এসেছে তার সঠিক বণ্টনের ব্যাপারে তিনি সজাগ দৃষ্টি রেখেছেন। তার নির্দেশে প্রকৃত সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের খাবার সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের মাঝে খাবার সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।
একই সময়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে নিয়মমাফিক কার্যক্রমও চালিয়েছিলেন ওসি কামরুল ফারুক।
এসব বিষয়ে ওসি কামরুল ফারুক বলেন, পুরো বিশ্বে করোনা এখন মহামারি। এই মহামারি থেকে সিদ্ধিরগঞ্জবাসীকে দূরে রাখতে প্রধানমন্ত্রী, আইজিপি ও ডিআইজির নির্দেশক্রমে এবং বিশেষজ্ঞ, চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী সাধ্য অনুযায়ী কাজ করে যাচ্ছি, আগামীতেও করে যাব ইনশাআল্লাহ।
এফএ/এমএস