গাজীপুরে করোনা আক্রান্ত সাড়ে ৩ হাজার ছাড়াল, মৃত্যু ৪৩

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি গাজীপুর
প্রকাশিত: ০৫:২৪ পিএম, ০১ জুলাই ২০২০

গাজীপুরে বেড়েই চলছে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ৮৮ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল তিন হাজার ৫২৩ জন। এখন করোনায় মারা গেছেন ৪৩ জন। বুধবার (১ জুলাই) গাজীপুরের সিভিল সার্জন ডা. মো. খায়রুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সিভিল সার্জন বলেন, গাজীপুরে মোট আক্রান্তদের মধ্যে কালিয়াকৈর উপজেলার ৪১৮ জন, কালীগঞ্জের ৩২৯, কাপাসিয়ার ২৩৪, শ্রীপুরের ৪২১ ও গাজীপুর সদর ও সিটি কর্পোরেশন এলাকার দুই হাজার ১২১ জন রয়েছে। করোনায় আক্রান্ত হয়ে জেলায় এ পর্যন্ত মারা গেছেন ৪৩ জন। সুস্থ্য হয়েছেন ১০২৫ জন।

সিভিল সার্জন ডা. মো. খায়রুজ্জামান বলেন, গাজীপুরে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৭০ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৮৮ জনের করোনা পজিটিভ হয়েছে। আর গাজীপুর থেকে এ পর্যন্ত ২৪ হাজার ১৯০ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে তিন হাজার ৫২৩ জন।

এদিকে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস ক্রমাগত ছড়িয়ে পড়ছে শহর থেকে গ্রামে। গাজীপুর শহর ও গ্রামের মানুষ ঘরবন্দী জীবনযাপন করছেন না। করোনা পরিস্থিতির আগেও যেভাবে মানুষ চলাফেরা করতেন এখনও তাই করছেন। প্রায় সব এলাকায় রয়েছে ছোটবড় হাটবাজার। সেখানে কোনো প্রকার স্বাস্থ্যবিধি মানা হয় না। অনেকে আবার বাজার করে চায়ের দোকানে আড্ডা দিয়ে সময় পার করছেন। রাস্তাঘাটে গভীর রাত পর্যন্ত মানুষজন চলাচল করছে।

গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক তপন কান্তি সরকার বলেন, এলাকার হাট-বাজার নিয়েই এখন বেশি আতঙ্ক। মানুষ সেখানে স্বাস্থ্যবিধি একেবারেই মানছে না। অনেকের মুখে মাস্ক পর্যন্ত নেই। গাজীপুরে এখন উপসর্গহীন রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি। তাই সংক্রমিত হওয়ারও সম্ভাবনা অনেক বেশি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, করোনা সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচার অন্যতম উপায় হচ্ছে জীবাণুনাশক ব্যবহার। যা অনেকাংশেই মানুষকে করোনা থেকে রক্ষা করতে পারে। কিন্তু করোনাকালে এই জীবানুনাশকের দাম অনেক। তাই গাজীপুরের গ্রাম অঞ্চলগুলোতে এসবের ব্যবহার অনেক কম। হাত ধোয়ার প্রবণতা সবার মধ্যে বাড়লেও হাটবাজারগুলোতে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা সীমিত হয়ে পড়েছে। জয়দেবপুর বাজারে ও আশপাশে বেশ কয়েকটি পানির ড্রাম ও সাবানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেগুলিতে আগে পানি ও সাবান পাওয়া গেলেও এখন বেশিরভাগ ড্রাম পানি শূন্য হয়ে পড়ে আছে। সাবান নেই একটিতেও।

জয়দেবপুর বাজারে সবজি কিনতে এসেছেন গাজীপুর শহরের ট্যাংকিরপাড় এলাকার সিরাজ উদ্দিন। তিনি বাজার শেষে একটি ড্রামে হাত পরিষ্কার করতে গিয়ে দেখেন পানি নেই। পরে পাশের হোটেলে গিয়ে হাত পরিষ্কার করেন।

সিরাজ উদ্দিন বলেন, দিন দিন করোনায় আক্রান্তের সংখ্য বাড়ছে। তারপরও আমরা ততোটা সতর্ক হচ্ছি না। এমন নয় যে, করোনা চলে গেছে। করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে তাই আমাদের আরও সতর্ক হতে হবে।

গাজীপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক মাজহারুল ইসলাম বলেন, গাজীপুরে করোনা ছড়ানোর বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে পোশাক কারখানার শ্রমিক। তাদের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো প্রবণতা নেই বললেই চলে। তারা যেমন খুশি তেমন চলাফেরা করছে। যার কারণে উপসর্গহীন আক্রান্তরা করোনাভাইরাস ছড়িয়ে বেড়াচ্ছে।

গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এস এম তরিকুল ইসলাম জানান, গাজীপুরের হাটবাজারগুলোতে নিয়মিত অভিযান চালানো হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি না মানা হলে জরিমানা করা হচ্ছে। তাদের একাধিক টিম নিয়মিত মাঠে কাজ করছে।

আমিনুল ইসলাম/আরএআর/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।