করোনাভাইরাসে খুলনায় বাবা-ছেলেসহ ৬ জনের মৃত্যু
খুলনায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ও উপসর্গ নিয়ে বাবা-ছেলেসহ ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। খুলনার করোনা হাসপাতাল, খুমেক হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়।
এরই মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় খুমেকের আরটি-পিসিআর ল্যাবে ১১০ জনের নতুন করে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। শনিবার (১১ জুলাই) রাতে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।
খুলনা করোনা হাসপাতালের ফোকাল পার্সন ডা. শেখ ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, করোনায় আক্রান্ত হয়ে এ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইয়াদ আলী (৭৫) নামে এক পল্লী চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার সকাল ৮টায় তিনি মারা যান। তিনি বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার বাহিরদিয়া-মানসার সাতবাড়িয়া গ্রামের আলিমুদ্দিনের ছেলে।
তিনি আরও বলেন, বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বাদশা (২৭) নামে এক করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি সকালে মারা যাওয়া ফকিরহাটের ইয়াদ আলীর ছেলে। গত ৮ জুলাই রাত ৯টায় খুলনা করোনা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন তিনি। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে, করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের করোনা সাসপেক্টেড আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চারজনের মৃত্যু হয়েছে।
মৃতরা হলেন- সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার মন্দকাঠি গ্রামের কুদ্দুসের স্ত্রী মরিয়ম (৫০), ডুমুরিয়ার মিকশিমিল এলাকার দ্বীন মোহাম্মদ গাজীর স্ত্রী ফাতেমা (৫৫), নগরীর খানজাহান আলী থানাধীন মশিআলী এলাকার জাকির সরকারের স্ত্রী হালিমা বেগম (৭৮) ও বাগেরহাটের ফকিরহাটের সেকেন্দার শেখের ছেলে আব্দুস সালাম (৫০)।
খুমেক হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ও আইসোলেশন ওয়ার্ডের মুখপাত্র ডা. মিজানুর রহমান বলেন, জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্টর সমস্যা নিয়ে শুক্রবার দুপুরে ভর্তি হন মরিয়ম। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার ভোরে তার মৃত্যু হয়। ডুমুরিয়ার ফাতেমা জ্বর, শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে ভর্তি হন শুক্রবার রাত ১২টা ২০ মিনিটে। শনিবার সকাল সোয়া ৬টায় তার মৃত্যু হয়। খানজাহান আলী থানার হালিমা বেগম একই সমস্যা নিয়ে বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে ১টায় ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে আইসিইউতে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার সকাল সোয়া ৯টায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি।
এছাড়া ফকিরহাটের আব্দুস সালাম শুক্রবার দুপুর ১টায় জ্বর, শ্বাসকষ্ট সমস্যা নিয়ে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে আইসিইউতে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার বিকেল সোয়া ৪টায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি। মৃতরা করোনা আক্রান্ত ছিলেন কি-না তা পরীক্ষার জন্য তাদের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় খুমেকের ল্যাবে ১১০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। যার মধ্যে ৯৮ জন খুলনার। বাকিরা বিভিন্ন জেলার। তাদের নমুনা পরীক্ষার পর রিপোর্ট পজিটিভ আসলে এ তথ্য জানা যায়।
খুলনা মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ডা. মেহেদী নেওয়াজ বলেন, শনিবার খুমেকের আরটি-পিসিআর মেশিনে মোট ২৮২ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। যার মধ্যে খুলনার নমুনা ছিল ২৪২টি। এদের মধ্যে মোট ১১০ জনের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। যার মধ্যে ৯৮ জন খুলনা জেলা ও মহানগরীর। এছাড়া বাগেরহাটের চারজন, যশোরের তিনজন, নড়াইলের দুইজন, বরিশাল, বরগুনা ও ঢাকার একজন করে করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন।
আলমগীর হান্নান/এএম/এমকেএইচ