সিলেট থেকে করোনার ভুয়া সনদ নিয়ে বিদেশযাত্রা, চিকিৎসক গ্রেফতার
অডিও শুনুন
এবার টাকার বিনিময়ে করোনাভাইরাসের ভুয়া নেগেটিভ সনদ বিক্রি করছেন সিলেটের এক চিকিৎসক। পাশাপাশি নিজে করোনা আক্রান্ত হয়েও চেম্বারে রোগী দেখা এবং এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচয় ব্যবহার করায় চিকিৎসক এএইচএম শাহ আলমকে জেল-জরিমানা করা হয়েছে।
রোববার (১৯ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় নগরের মধুশহীদর ডায়াগনেস্টিক সেন্টার মেডিনোভা মেডিকেল সার্ভিসেস লিমিটেডের নিচতলায় ডা. এ এইচ এম শাহ আলমকে নিয়ে অভিযান চালায় র্যাব-৯ এর একটি দল। পরে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পরপরই অভিযানের নেতৃত্বে থাকা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুনন্দা রায় ওই চিকিৎসককে চার মাসের কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা করেন।
সিলেট জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুনন্দা রায় বলেন, ডা. শাহ আলমকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর করোনার ভুয়া সার্টিফিকেট বিক্রির কথা স্বীকার করেছেন। পরে তাকে চার মাসের জেল ও এক লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক মাসের জেল দেয়া হয়।
তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের ভুয়া নেগেটিভ সনদ বিক্রি ও প্যাডে মিথ্যা তথ্য ব্যবহারসহ বিভিন্ন অভিযোগে তাকে এ সাজা দেয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আসা সব অপরাধের প্রমাণপত্র আমাদের কাছে আছে।
সিলেট র্যাব-৯ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সামিউল আলম বলেন, ডা. শাহ আলম বিদেশ যাত্রীসহ কয়েকজনকে করোনার ভুয়া সনদ টাকার বিনিময়ে দিয়েছেন বলে র্যাবের কাছে স্বীকার করেন। পরে তাকে নিয়ে তার চেম্বার মেডিনোভা মেডিকেল সার্ভিসেস লিমিটেডে অভিযান চালানো হয়।
তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন অভিযোগ পেয়ে আমরা তদন্ত শুরু করি। এরপর তাকে র্যাবের কার্যালয়ে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সব অপরাধ স্বীকার করেন। গত ১৪ জুলাই ডা. আলম করোনায় আক্রান্ত হয়েও চেম্বারে রোগী দেখতেন নিয়মিত। পাশাপাশি এই চিকিৎসক সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার হিসেবে যে পদ ব্যবহার করতেন তা ভুয়া বলেও স্বীকার করেন।
জানা গেছে , ডা. শাহ আলম নগরের মধুশহীদ এলাকায় মেডিনোভা মেডিকেল সার্ভিসেস লিমিটেডের নিচতলায় চেম্বার করেন। বিদেশ যাত্রীদের জন্য বিভিন্ন দেশ ও এয়ারলাইন্স করোনা নেগেটিভ সনদ বাধ্যতামূলক করার পর প্রবাসীদের টার্গেট করেন ডা. শাহ আলম। বিভিন্ন মাধ্যমে তিনি বিদেশ যাত্রীদের কাছে খবর পৌঁছান করোনা নেগেটিভ সনদ ব্যবস্থা করে দেয়ার। করোনা নেগেটিভ সনদ দেয়ার কথা বলে বিদেশ যাত্রীদের কাছ থেকে তিনি চার হাজার টাকা করে আদায় করেন। ফ্লাইটের ৪৮ ঘণ্টা আগে তিনি ওই প্রবাসীকে ডেকে নিয়ে হাতে ধরিয়ে দেন করোনার ভুয়া প্রত্যয়নপত্র। রোগী বা যাত্রীকে না দেখেই নিজের প্যাডে দেয়া ওই প্রত্যয়পত্রে ডা. শাহ আলম লিখে দেন, তিনি ওই ব্যক্তিকে তার চেম্বারে দেখেছেন। তার মধ্যে কোভিড-১৯ এর কোনো লক্ষণ নেই।
ছামির মাহমুদ/এএম/এমএসএইচ