পঞ্চগড়ে লোকালয়ে বাঘ, রাত জেগে পাহারায় গ্রামবাসী

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি পঞ্চগড়
প্রকাশিত: ০২:৩১ এএম, ২১ আগস্ট ২০২০

পঞ্চগড়ের ভারতীয় সীমান্তঘেঁষা মুহুরীজোত, সাহেবীজোত, উষাপাড়া ও বাদিয়াগছ এলাকার লোকালয়ে বাঘ আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। কয়েকদিন ধরে এসব এলাকা একাধিক মানুষ দিনে ও রাতে বাঘ দেখতে পেয়েছেন। বাঘের আক্রমণের শিকার হয়েছে গরু-ছাগলও। বিভিন্ন স্থানে দেখা গেছে বাঘের পায়ের ছাপও। এলাকায় বাঘের আনাগোনা দেখা যাওয়ায় স্থানীয় হাজারও মানুষ আতঙ্কে দিন পার করছেন। রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন।

বৃহস্পতিবার দিনভর সদর উপজেলার সাতমেরা ইউনিয়নের মুহুরীজোত, সাহেবীজোত, উষাপাড়া ও বাদিয়াগছ গ্রামের ভারতীয় সীমান্ত এলাকায় পরিচর্চাহীন একটি চা-বাগানের আশপাশে উৎসুক মানুষের ভিড় লেগেছিল। দূর-দূরান্ত থেকে মানুষজন বাঘ দেখতে এসেছেন। চা-বাগানের ঝোপঝাড়ে বাঘ লুকিয়ে রয়েছে বলে আতঙ্কিত স্থানীয়রাও। অনেকে বাগানের ভেতরে ঢুকেও বাঘ দেখার চেষ্টা করছেন। বিভিন্ন স্থানে বাঘ ধরতে ফাঁদ পেতে রাখা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানায়, রাতে পথেপ্রান্তরে বাঘ ঘুরছে। আকারে লম্বা ও গায়ে কালো গোল ছাপ। দুটি বড় ও তিনটি বাঘশাবক পাশের মহাসড়কেও চলাফেরা করছে। এরা শিকার ধরতে ঝোপঝাড়ের পাশে ওতপেতে থাকে। ভারত থেকে সীমান্ত দিয়ে এসব বাঘ প্রবেশ করেছে বলে তাদের ধারণা।

jagonews24

বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিরা। খবর পেয়ে বাঘ ধরতে ঢাকা থেকে বনবিভাগের প্রশিক্ষিত কর্মীরা ঘটনাস্থলে কাজ শুরু করেছেন। বনবিভাগের ধারণা, লোকালয়ে দেখা যাওয়া বাঘগুলো চিতা।

উষাপাড়া এলাকার আবুল কালাম বলেন, ‘আমি গরু নিয়ে বাড়ি ফিরছিলাম। যে গরুটি সবার আগে আগে যাচ্ছিল তার ওপর হামলা করে বাঘ। মুহূর্তের মধ্যে গরুটি হত্যা করে তার কাছে বসেছিল বাঘটি। আমি গরু উদ্ধার করতে গেলে আমার দিকেও তেড়ে আসে। পরে চিৎকার করলে স্থানীয়রা ছুটে আসে। দ্রুত পালিয়ে যায় বাঘটি।

jagonews24

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফ হোসেন বলেন, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বাঘের কিছু আলামত পেয়েছি। বনবিভাগের কর্মকর্তারা বাঘধরা বা বাঘের অবস্থান নিশ্চিত করার জন্য কাজ করছেন। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। স্থানীয়দের প্রয়োজন ছাড়া বাড়ি থেকে বের না হওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। এছাড়া বাঘের আক্রমণে যাদের গরু-ছাগল মারা গেছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের সহযোগিতা করা হবে।

সামাজিক বনবিভাগ দিনাজপুরের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. আব্দুর রহমান বলেন, স্থানীয়দের তথ্যমতে দুটি প্রাপ্তবয়স্ক ও তিনটি বাচ্চাবাঘ দেখেছেন তারা। তাদের বর্ণনা অনুযায়ী আমরা ধারণা করছি এগুলো চিতাবাঘ। আমরা বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তারা ঢাকা থেকে একটি অভিজ্ঞ টিম পাঠিয়েছেন। তবে বাঘগুলোর সুনির্দিষ্ট অবস্থান এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আমরা বাঘগুলোর অবস্থান নিশ্চিত হয়ে জীবিত অবস্থায় ধরতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।

সফিকুল আলম/বিএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।