চুয়াডাঙ্গায় দু’দিনের মাথায় পাল্টে গেল আ.লীগ প্রার্থী

সমস্ত আলোচনার অবসান ঘটিয়ে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেলেন জাহাঙ্গীর আলম মালিক ওরফে খোকন। তিনি বর্তমানে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর।
এর আগে শনিবার বিকেলে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সভা শেষে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার সাবেক মেয়র ও চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটনকে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয়।
কিন্তু সোমবার (৩০ নভেম্বর) দুপুর থেকে চুয়াডাঙ্গা পৌরশহরসহ জেলাজুড়ে চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন পরিবর্তনের বিষয়টির ব্যাপারে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়। তবে ওই সময় দায়িত্বশীল কোনো সূত্র থেকে বিষয়টির ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
অবশেষে রাত পৌনে ১১টার সময় মনোনয়ন পরিবর্তনের চিঠি ও দলীয় মনোনয়ন ফর্ম জাগো নিউজের হাতে এসে পৌঁছায়।
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন মনোনয়ন বোর্ডের সভাপতি শেখ হাসিনা স্বাক্ষরিত দলীয় প্যাডের চিঠিতে লেখা আছে, ‘স্থানীয় সরকার/পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দারকে দলের মনোনয়ন প্রদান করা হয়েছিল। পরবর্তীতে তার মনোনয়ন বাতিল করে ৩০ নভেম্বর ২০২০ তারিখে জাহাঙ্গীর আলম মালিককে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের চূড়ান্ত মনোনয়ন প্রদান করা হলো।’
রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন
তবে কী কারণে দলীয় মনোনয়ন পরিবর্তন করা হলো এ ব্যাপারে ওই চিঠিতে কিছু উল্লেখ করা হয়নি।
এদিকে চুয়াডাঙ্গা পৌর নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার ও জেলা নির্বাচন অফিসার তারেক আহম্মেদ জানান, চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের চূড়ান্ত মনোনয়ন কাকে দেয়া হয়েছে এ সংক্রান্ত কোনো চিঠি সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত তিনি হাতে পাননি।
মঙ্গলবার (১ ডিসেম্বর) বিকেল ৫টা পর্যন্ত মনোনয়ন দাখিলের দিন ধার্য রয়েছে। ওই দিনই এ ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পারবেন বলে জানান তিনি।
সূত্র জানায়, এর আগে গত বুধবার জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে চুয়াডাঙ্গার-১ আসনের সংসদ সদস্য সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুনের ছোট ভাই সাবেক মেয়র ও চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন এক নম্বর ক্রমিকে, দুই নম্বর ক্রমিকে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর আলম মালিক ওরফে খোকন এবং তিন নম্বর ক্রমিকে চুয়াডাঙ্গা জেলা যুবলীগের সদস্য শরিফ হোসেন দুদুর নাম প্রস্তাব করে কেন্দ্রে পাঠানো হয়।
শনিবার বিকেলে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সভা শেষে রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটনের নাম ঘোষণা করা হয়। দলীয় মনোনয়ন পাওয়ায় ওইদিন সন্ধ্যায় টোটনের অনুসারী নেতা-কর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল করেন এবং মিষ্টি বিতরণ করেন।
উল্লেখ্য, প্রথম ধাপের পৌর নির্বাচনে ২৮ ডিসেম্বর চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার ভোট গ্রহণের দিন নির্ধারণ করেছে নির্বাচন কমিশন। তফসিল অনুযায়ী ১ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন।
চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার মোট ভোটার সংখ্যা ৬৭ হাজার ৭৭৪ জন। এর মধ্যে ১নং ওয়ার্ডে ৭৯৯৮ জন, ২নং ওয়ার্ডে ৭৯০০ জন, ৩নং ওয়ার্ডে ৬১৫২ জন, ৪নং ওয়ার্ডে ৬৩৭০ জন, ৫নং ওয়ার্ডে ৭৫১৯ জন, ৬নং ওয়ার্ডে ৮৬০২ জন, ৭নং ওয়ার্ডে ৮৪৯৮ জন, ৮নং ওয়ার্ডে ৭৬৭৫ জন এবং ৯নং ওয়ার্ডে ৭০৬০ জন।
নির্বাচনে ৩৩টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ করা হবে। মেয়র পদে প্রার্থীরা ব্যক্তিগত ব্যয় ৩০ হাজার টাকা এবং নির্বাচনী ব্যয় ৪ লাখ টাকা পর্যন্ত করতে পারবেন। ওয়ার্ডের ক্ষেত্রে প্রার্থীরা ব্যক্তিগত ৫-৭ হাজার টাকা এবং সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ১৫ হাজার টাকা ব্যয় করতে পারবেন।
কাউন্সিলর পদে ৫০ হাজার টাকা এবং সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ২ লাখ টাকা নির্বাচনী ব্যয় করতে পারবেন। মেয়র পদে দলীয় প্রতীক এবং স্বতন্ত্র পদে ১০০ জনের স্বাক্ষর করে মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে। কাউন্সিলর পদে প্রতীকের কোনো প্রয়োজন হবে না।
সালাউদ্দীন কাজল/এফএ/জেআইএম