ভাঙা খুপড়ি ঘরে কনকনে শীতে কাহিল মা-মেয়ে

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ঝালকাঠি
প্রকাশিত: ০৬:২৩ পিএম, ১৯ ডিসেম্বর ২০২০

কনকনে শীত পড়া শুরু হয়েছে। এই শীতে গরম পোশাক ছাড়া বাইরে বের হওয়ায় দুষ্কর। তবে সবার তো আর গরম কাপড় নেই। তাই এই শীতে নিদারুণ কষ্ট করতে হয় তাদের। তাদের মতোই এই শীতে ভালো নেই ঝালকাঠির রাজাপুরের মঠবাড়ি ইউনিয়নের মঠবাড়ি গ্রামের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত আনসার হাওলাদারের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম (৫০) ও ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষে পড়ুয়া মেয়ে তুলি আক্তার।

২০ বছর আগে দিনমজুর আনসার হাওলাদার তিনটি মেয়ে সন্তান রেখে মারা যান। সংসারে উপার্জনের কেউ নেই। ১২ শতাংশের বসতভিটায় বাঁশ, টিন দিয়ে এক কক্ষবিশিষ্ট একটি ঝুপড়ি ঘর ছাড়া আর কিছুই নেই। স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে মনোয়ারা অন্যের ঘরে ঝিয়ের কাজ করে সংসার চালিয়ে আসছেন।

বড় মেয়ে লাইজু বেগমের বিয়ে হয়েছে রংপুরের সুলতানের সঙ্গে। সুলতান পেশায় একজন পোশাককর্মী। থাকেন ঢাকায়। মেজ মেয়ে রুবি বেগমের স্বামী শামিম বেপারী ঢাকায় রিকশা চালান। বড় জামাই সুলতান মাঝেমধ্যে কিছু টাকা পাঠান। তা দিয়ে ১০ টাকা মূল্যের চাল কিনে কোনোরকম অর্ধাহারে-অনাহারে দিনাতিপাত করছেন তারা।

বর্তমানে তাও কিনতে পারছেন না। কারণ সুলতানও করোনার সময় টাকা পাঠাতে পারছেন না। সংসার চালাতে মানুষের কাছে হাত পাততে হয় মনোয়ারা বেগমের। ছোট মেয়ে তুলি আক্তার উপজেলার বড়ইয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষে লেখাপড়া করছেন। মেধাবী ছাত্রী তুলির লেখাপড়ার সকল খরচ বহন করছেন ওই কলেজের অধ্যক্ষ উপজেলা চেয়ারম্যান মনিরউজ্জামান।

মনোয়ারার বুকে ব্যথা ও পায়ে সমস্যা হওয়ায় ৬ মাস হলো কোনো কাজ করতে পারছেন না। অর্থাভাবে চিকিৎসকও দেখাতে পারছেন না। বর্তমানে যে ঝুপড়ি ঘরে থাকেন তার বেড়া নেই। তাই ঠান্ডা বাতাস আসে। বৃষ্টির দিনে ঘরে পানি পড়ে সবকিছু ভিজে যায়।

তাদের কষ্টের কথা শুনে ২০১৯ সালের ২১ নভেম্বর মাসে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সোহাগ হাওলাদার কিছু চালের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। এছাড়া আর কারও সাহায্য-সহোযোগিতা পাননি।

মা মনোয়ারা ও কলেজ পড়ুয়া মেয়ে তুলি আক্তার সরকার এবং বিত্তশালীদের কাছে একটি ঘর ও দু’মুঠো খেয়ে বেঁচে থাকার জন্য সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন। সাহায্য পাঠাতে ০১৭০৭৬২৪৩৪৮ নম্বরে যোগাযোগ করার আহ্বান পরিবারটির।

মঠবাড়ি ইউনিয়নের মঠবাড়ি গ্রামের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চারমিং জানান, বিধবা মনোয়ারা বেগম খুব অসহায় অবস্থায় আছেন। তিনি ভাঙা খুপড়ি ঘরে অতিকষ্টে বসবাস করতেছেন। তার একটি ঘর খুবই জরুরি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোক্তার হোসেন জানান, তাদের বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আতিকুর রহমান/এসআর/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।