অক্সিজেনশূন্য নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ হাসপাতাল, মৃতের সংখ্যা বাড়ছে
দেশে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ চলাকালীন আক্রমণের পাশাপাশি বাড়ছে মুমূর্ষু রোগীর সংখ্যা। এ অবস্থায় নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে অক্সিজেন স্বল্পতা দেখা দিয়েছে। এতে রোগীর সঠিক চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে।
সম্প্রতি অক্সিজেন না থাকায় পুটিমারী ইউনিয়নের সাদুরার পুল গ্রামের এক ব্যক্তি হাসপাতালের জরুরি বিভাগে মারা গেছেন। রোববার (২০ ডিসেম্বর) রাতে আরও একজন মারা গেছেন।
কিশোরগঞ্জ সদর ইউনিয়নের মুন্সিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা রেজাউল করিম রেজার স্ত্রী লিনা বেগমের শ্বাসকষ্ট দেখা হয়। রোববার রাত ১টার দিকে তাকে দ্রুত কিশোরগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে ভর্তি করার পর ওই রোগীকে অক্সিজেন দিতে না পারায় রোগীর অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে। তাৎক্ষণিক জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মাসুদ রানা ওই রোগীকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন।
লিনা বেগমের স্বামী অভিযোগ করে বলেন, ‘রোববার রাত ১টার দিকে আমার স্ত্রীর প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে আমি তাড়াতাড়ি তাকে নিয়ে কিশোরগঞ্জ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করি। কিন্তু হাসপাতালে ভর্তির পর জানতে পারি, জরুরি বিভাগে কোনো অক্সিজেন নেই। এ সময় আমার স্ত্রীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। আল্লাহর অশেষ রহমত আমার স্ত্রী বর্তমানে সুস্থ আছেন।’
তিনি আরও বলেন, যদি কোনো অঘটন ঘটতো, তাহলে আমার বাচ্চারা এতিম হয়ে যেত। বিষয়টি তদন্ত করে দোষীদের বিচার দাবি করেন তিনি।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মাসুদ রানা জানান, তার অফিস ডিউটি টাইম রোববার রাত ৮টা থেকে সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত। অক্সিজেন না থাকার কথা জানতে চাইলে বলেন, ‘আমাদের এখানে টেকনিক্যাল ম্যান পাওয়ার না থাকার কারণে কালা নামের একজন ওয়ার্ডবয় দিয়ে কাজ করাতে হয়। তিনি বাড়ি চলে যাওয়ায় কারণে এ সমস্যা হয়েছে।’
কিশোরগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালের কর্মকর্তা আবু শফি বলেন, ‘এ রকম হওয়ার কথা নয়। যদি তা হয় তার দায়ভার জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎকের। কারণ তিনি দায়িত্ব নেয়ার আগে সব ধরনের সরঞ্জাম চেক করে দেন। আর এ রকম যদি হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই কর্তব্যরত চিকিৎককে চিঠির মাধ্যম জানাতে হবে।’
জাহেদুল ইসলাম/এসআর/এমকেএইচ