এতিমদের নিয়ে খেজুর রসের পিঠা উৎসব

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি নড়াইল
প্রকাশিত: ০৪:২৪ এএম, ১২ জানুয়ারি ২০২১

শীতকে উপভোগ্য করতে নড়াইলে দেড় শতাধিক এতিম শিশুদের নিয়ে আয়োজন করা হলো আবহমান গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী খেজুর রসের পিঠা উৎসব। এই উৎসবকে ঘিরে মা বাবা হারা এসব এতিম শিশুদের যেন আনন্দের শেষ ছিল না। নিজেদের হাতে তৈরি পিঠা ভাগাভাগি করে খেয়েছে তারা। এ যেন এক অন্যরকম অনুভূতি।

নড়াইল সদর উপজেলার সীমানন্দপুর গ্রামে ১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠিত ‘আজিজুর রহমান বালিকা সমাজ সেবা এতিমখানা’। সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত এতিম সদস্যের সংখ্যা ১৪০ জন। তবে এখানে দু’শতাধিক এতিম শিশুর বসবাস।

এতিমখানার নিবাসী মদিনা খানম, মাহমুদা খানম, নাঈমা সুলতানা, রূপালী খানম, সুমাইয়া, শান্তা, সাদিয়া, মাসুরা, জাকিয়া, কুলসম, লাবনী জানায়, আমাদের কারও মা আবার কারও বাবা নেই। আমাদের বাড়ির আর্থিক অবস্থাও ভালো না। আমরা সবাই মিলে-মিশে থাকার কারণে মা বাবার কষ্ট ভুলে থাকতে পারি।

তারা আরও জানায়, আমাদেরকে এই শীতে খেজুর রসের পিঠা খাওয়ানোতে খুব খুশি হয়েছি। আমরা নিজেরা আতপ চাল থেকে গুঁড়া তৈরি করেছি। এরপর খেজুরের রস দিয়ে ভিজা পিঠা তৈরি করেছি। আমরা এক লাইনে বসে এক সঙ্গে খেয়েছি। অন্যান্য সময় বিভিন্ন ফল খাওয়ানো হয়। কিছুদিন আগে আমাদের চিতই পিঠা খাওয়ানো হয়েছিল।

এতিমখানার তত্ত্বাবধায়ক মো. আব্দুল কাদের বলেন, নড়াইলসহ দেশের বিভিন্ন জেলার শিশুরা এই এতিম খানায় বসবাস করে। তারা বয়স ভেদে প্রাথমিক বিদ্যালয়, স্কুল, মাদরাসা ও কলেজে পড়াশোনা করে। এদের কারও মা নেই আবার কারও বাবা নেই। অনেকের আবার মা-বাবা কেউ নেই। বাড়ির আর্থিক অবস্থাও ভালো না। তাই তাদের চাহিদা আমরা পূরণ করার চেষ্টা করি।

তিনি আরও বলেন, ওরা যাতে পরিবারের কষ্ট ভুলে থাকতে পারে সে জন্য বিভিন্ন সময় বিভিন্ন আয়োজন করে থাকি। এবার খেজুর রসের ভিজা পিঠা উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। কয়েকদিন আগে আগে চিতই পিঠার উৎসব করা হয়। এতে আমাদেরও ভালো লাগে।

এতিমখানার প্রতিষ্ঠাতা চন্ডিবরপুর ইউপি চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, এখানে দুই শতাধিক মেয়ে রয়েছে। আমরা ১৪০জন এতিম শিশুর জন্য সরকারি অনুদান পেয়ে থাকি। বাকিদের ভরণ-পোষণ বিত্তবানদের সহযোগিতায় চলে। এতিম শিশুদের লালন-পালন ও জীবনমান উন্নয়নে সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসা প্রয়োজন।

হাফিজুল নিলু/এসজে

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।