৭৬ মাইকের ‘তাণ্ডবে’ অতিষ্ঠ মির্জাপুরের ৩২ হাজার মানুষ
দেশজুড়ে পৌরসভা নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত হচ্ছে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর পৌরসভার নির্বাচন। মেয়র, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত আসনে সব মিলিয়ে সেখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪০ প্রার্থী। গত ১১ জানুয়ারি প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই শুরু হয়েছে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা। প্রার্থীদের প্রচারণার কাজে শহরব্যাপী দাপিয়ে বেড়াচ্ছে কমবেশি ৭৬টি মাইক।
জনগণের ভালো-মন্দ যারা দেখভাল করবেন তাদের প্রচারণার বিকট শব্দে বিরক্ত পৌরবাসী। শুধু তাই নয়, স্বাস্থ্যঝুঁকিতেও পড়েছেন তারা। অসুস্থ, বয়স্ক ও শিশুদের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। মাইকের অতিমাত্রার শব্দে দৈনন্দিন কাজকর্মেও বিঘ্ন ঘটছে বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মির্জাপুর পৌরসভা নির্বাচনে দুজন মেয়র প্রার্থী, ২৮ জন কাউন্সিলর প্রার্থী ও ১০ জন সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
নির্বাচন বিধি অনুযায়ী, প্রতি ওয়ার্ডে মেয়র প্রার্থীরা একটি, কাউন্সিলর প্রার্থীরা একটি ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থীরা একটি করে মাইক ব্যবহার করতে পারবেন। প্রতিদিন দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মাইকে প্রচারণা চালানো যাবে।
২০০০ সালে প্রতিষ্ঠিত মির্জাপুর পৌরসভার আয়তন ৮ দশমিক ৫৮ বর্গকিলোমিটার। ৯টি ওয়ার্ডে জনসংখ্যা প্রায় ৩২ হাজার। ভোটার ২১ হাজার ৬৬৯ জন। এর মধ্যে নারী ১১ হাজার ৪৬৫ ও পুরুষ ভোটার ১০ হাজার ২০৪।
স্থানীয়রা জানান, প্রতিদিন দুপুর ২টা থেকে মাইক নিয়ে প্রচারণায় নেমে পড়েন সংশ্লিষ্ট প্রার্থীদের সমর্থকরা। অনেক সময় একই সড়কে অটোরিকশায় একাধিক প্রার্থীর প্রচারণার মাইক আসে। অতিরিক্ত শব্দ সহ্য করতে না পেরে ওই সময়টুকু দুই হাত দিয়ে কান চেপে ধরেন। উচ্চস্বরের প্রচারণায় আশপাশে থাকা সাধারণ মানুষ, ব্যবসায়ীদের দৈনন্দিন কাজ, মসজিদ, ক্লিনিক, অফিস, ব্যাংকের নিয়মিত কর্মকাণ্ডেও ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে। স্বল্পসংখ্যক ভোটারের জন্য এতগুলো মাইক বরাদ্দ অপ্রয়োজনীয় বলে মনে করেন সচেতন মানুষ। স্বাস্থ্যঝুঁকির আশঙ্কাও করছেন অনেকে।
প্রার্থীদের প্রচারণায় থাকা অটোরিকশা চালকরা জানান, প্রার্থীর লোকজন বেলা দেড়টার দিকে প্রচারণার জন্য প্রস্তুত থাকেন। ২টা বাজার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় মাইকিং। চলে রাত ৮টা পর্যন্ত।
ব্যবসায়ীরা জানান, অনেক সময় একাধিক প্রার্থীর মাইকিং একসঙ্গে আসে। মাইকের শব্দে কান ঝালাপালা হয়ে যায়। মাইকের যন্ত্রণাদায়ক শব্দের কারণে মুঠোফোনে কথা বলাসহ কাজকর্ম করা যায় না। মাইকিংয়ের সাউন্ড সীমিত করে দেয়া উচিত।
মির্জাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাকসুদা খানম বলেন, অতিরিক্ত শব্দ দূষণে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। সেজন্য যেকোনো শব্দ সহনীয় মাত্রায় রাখতে হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আবদুল মালেক বলেন, ‘নিয়মনীতি মেনেই প্রার্থীরা মাইকিং করছেন। শব্দে মানুষের কিছুটা ভোগান্তি হচ্ছে। তবে কেউ আচরণবিধি ভঙ্গ করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এস এম এরশাদ/এসএস/জিকেএস