মেহেরপুরে বেড়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ
কখনও ঠান্ডা কখনও গরম। এমন বৈরী আবহাওয়ার কারণে মেহেরপুরের গাংনীতে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। প্রতিদিনই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিচ্ছেন ২৫-৩০ জন। তবে আক্রান্তদের মধ্যে শিশুদের সংখ্যাই বেশি।
পাঁচদিনে ১৪৫ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। ভর্তি হয়েছেন ৭২ জন। শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় হিমশিম খেতে হচ্ছে এখানকার চিকিৎসকদের। অন্যদিকে বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন রোগীর স্বজনরা।
গাংনী হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, এক মাসে গাংনী হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ডায়রিয়া আক্রান্ত নারী-শিশু-পুরুষ মিলে ৫৬৩ জন রোগীকে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুর পর্যন্ত ভর্তি আছেন ১৬ জন। এখানে শিশুদের জন্য আলাদা কোনো ওয়ার্ড নেই। মহিলা ও শিশু ওয়ার্ডে শিশুদের ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
ডায়রিয়া রোগীদের জন্য আলাদা ওয়ার্ড থাকলে রোগ নিরাময় ও নিয়ন্ত্রণ সহজ হয়। বিশেষ করে শিশুদের জন্য আলাদা ওয়ার্ড খুবই জরুরি। তাছাড়া শিশু বিশেষজ্ঞ না থাকায় হাসপাতালে কর্মরত মেডিকেল অফিসাররাই শিশুদের চিকিৎসা দিচ্ছেন।
গাংনীর তেতুলবাড়িয়া গ্রামের জামিদুল ইসলামের ৯ মাস বয়সী শিশু আরিয়ান এ হাসপাতালের মহিলা ও শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছে রোববার (৩১ জানুয়ারি) থেকে। আকস্মিকভাবে ডায়রিয়া হলে তা কোনোভাবেই নিরাময় হচ্ছিল না বিধায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানান আরিয়ানের মা মাবিয়া খাতুন।
একই ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছে হিন্দা গ্রামের লিপন হোসেনের ১৩ মাস বয়সী কন্যা মেহজাবিন। মেহজাবিনের মা মালা পারভীন জানান, চারদিন ধরে হাসপাতালে তার চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ধীরে ধীরে তার শিশুটি সুস্থ হয়ে উঠছে। ডায়রিয়া হলে ১০-১৫ দিনের আগে শিশুরা সুস্থ হচ্ছে না বলেও জানান তিনি।
শিশু রোগীর কয়েকজন স্বজন জানান, আর্থিক অনটনের কারণে অন্য কোনো হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা করানো সবার পক্ষে সম্ভব নয়। তাই বাধ্য হয়ে গাংনী হাসপাতালেই শিশুদের চিকিৎসা করাচ্ছেন তারা। বিত্তবানরা সেবা নিচ্ছেন বিভিন্ন ক্লিনিকে।
ডায়রিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধির বিষয়ে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এম রিয়াজুল আলম বলেন, ঠান্ডা ও শীতে রোটা ভাইরাসের কারণে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। এ সময় শিশু ও বয়স্কদের দিকে বিশেষ নজর রাখতে অভিভাবকদের পরামর্শ দেন তিনি।
আসিফ ইকবাল/এসএমএম/এএসএম/এমএস