আক্কেলপুরে বিএনপিতে বিভক্তি, এগিয়ে আ.লীগ
জয়পুরহাটের আক্কেলপুর পৌরসভায় চতুর্থ ধাপে ১৪ ফেব্রুয়ারি ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ একক প্রার্থী দিতে পারলেও বিএনপির দুইজন প্রার্থী রয়েছেন। বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থীকে দল থেকে বহিষ্কার করা হলেও তিনি সরে দাঁড়াননি। এ অবস্থায় বিএনপির চাইতে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী।
পৌরসভায় মেয়র পদে মোট চার প্রার্থী রয়েছেন। নৌকা নিয়ে লড়ছেন আক্কেলপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শহীদুল আলম। একই পদে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে লড়ছেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আলমগীর চৌধুরী বাদশা। স্বতন্ত্র দুজনের মধ্যে জগ প্রতীক নিয়ে আরেক বিএনপি নেতা রেজাউল করিম সরদার বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন। হাতপাখা নিয়ে মেয়র পদে লড়ছেন ইসলামী আন্দোলনের একজন।
নির্বাচনে ৯ টি ওয়ার্ডে ভোটার ১০ হাজার ৬৬ জন পুরুষ ও নারী ভোটার ১০ হাজার ৩২৫ জন। সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৩৫ জন এবং সংরক্ষিত পদে লড়ছেন ১৯ জন প্রার্থী।
নির্বাচনী কার্যক্রম শুরুর পর আক্কেলপুরের বিএনপি নেতা রেজাউল করিম সরদার দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ায় তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে ৮ ফেব্রুয়ারি এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়। তবে বিএনপির এই নেতা কোনো পত্র পাননি বলে দাবি করেছেন।
এর আগে ২০১৫ সালের পৌরসভা নির্বাচনে রেজাউল করিম সরদার মেয়র পদে বিএনপির দলীয় প্রার্থী হয়েছিলেন। ওই নির্বাচনে বিএনপি নেতা ও সাবেক পৌর মেয়র আলমগীর চৌধুরী বাদশা মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী গোলাম মাহফুজ চৌধুরী মেয়র নির্বাচিত হন। এবার আক্কেলপুর পৌরসভা নির্বাচনে আলমগীর চৌধুরী বাদশা বিএনপির দলীয় মনোনয়ন পান। বিএনপির দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে গতবারের দলীয় মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম সরদার ‘জগ’ প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন।
এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সদস্য ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান কমল বলেন, ‘আমরা দলের অভ্যন্তরীন সমস্যা নিরসন করে এক হয়ে পৌরসভা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছি। জেলা ও উপজেলার অনেক সিনিয়র নেতারা রেজাউল করিম সরদারকে একাধিকবার বোঝালেও তিনি তা উপেক্ষা করে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন। পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিয়েছে দল।’
এ বিষয়ে মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম সরদার বলেন, ‘আমি এখনো এ ধরনের কোনো চিঠি পাইনি। তাই এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারছি না। গত পৌরসভা নির্বাচনে আমি বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী ছিলাম। অপরদিকে আলমগীর চৌধুরী বাদশা বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন। সেই সময় তাকে অনেকবার দলের নেতারা বোঝালেও তা প্রত্যাখ্যান করে তিনি নির্বাচন করেছিলেন। তার কারণে আমি নির্বাচনে হেরেছিলাম। দলে আমার অনেক অবদান রয়েছে। আমার সাথে প্রতারণা করে এবারের নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। আমি আলাদাভাবে নির্বাচন করছি, আমি বিজয়ে শতভাগ আশাবাদী।’
আক্কেলপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মাহফুজ চৌধুরী অবসর বলেন, ‘আমাদের দলীয় কোনো কোন্দল নেই। ছোটখাট সমস্যা থাকলেও তা সমাধান করে এক প্লাটফর্মে দাঁড়িয়ে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে নৌকা মার্কার পক্ষে অবস্থান নিয়েছি। দলীয় প্রার্থী হিসাবে শহীদুল আলম চৌধুরীকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মনোনয়ন দিয়েছেন। চলমান উন্নয়ন ধরে রাখতে নৌকা মার্কায় ভোট চাই।’
রাশেদুজ্জামান/এমএইচআর/জেআইএম