৪৮ বছর ধরে ঝুলছে চার মুক্তিযোদ্ধা হত্যার মামলা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি গোপালগঞ্জ
প্রকাশিত: ০৩:৫২ পিএম, ১০ মার্চ ২০২১

দীর্ঘ ৪৮ বছর পার হলেও গোপালগঞ্জের চার বীর মুক্তিযোদ্ধা হত্যা মামলার বিচার কাজ শেষ হয়নি। আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায় উচ্চ আদালতের মাধ্যমে অন্ততঃ ছয়বার মামলা স্থগিত করেছে। ফলে মামলাটি এখন নিম্ম আদালতে শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধে ৮ ও ৯ নং সেক্টরে গেরিলা বাহিনীর প্রধান সমন্বয়কারী ওয়ালিউর রহমান লেবু, ন্যাপ নেতা কমলেশ বেদজ্ঞ, ছাত্রনেতা বিষ্ণুপদ ও মানিককে ১৯৭৩ সালের ১০ মার্চ কোটালীপাড়ার টুপুরিয়া ব্রিজের কাছে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়।

মামলা সূত্রে জানা যায়, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭৩ সালে প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ন্যাপ নেতা কমলেশ বেদজ্ঞ কোটালীপাড়া আসনে প্রতিদ্বন্দিতা করেন। নির্বাচনী কাজ শেষে ১০ মার্চ সকালে উপজেলার সিকির বাজার থেকে নৌকায় করে গোপালগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওনা হন। নৌকাটি টুপুরিয়া ব্রিজের কাছে পৌঁছালে দুর্বৃত্তরা ওয়ালিউর রহমান লেবু, ন্যাপ নেতা কমলেশ বেদজ্ঞ, ছাত্রনেতা বিষ্ণুপদ ও মানিককে রামদা, কোদাল, লোহার রড, ছ্যান দিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করে। এ সময় তাদের সঙ্গে থাকা বর্তমান জেলা কৃষকলীগ নেতা লুৎফর রহমান গঞ্জরকে মৃত ভেবে ফেলে যায়।

ওই ঘটনার পরদিন ১১ মার্চ তৎকালীন প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট মো. আব্দুল কাদেরের কাছে দেয়া লুৎফর রহমানের জবানবন্দি অনুযায়ী গোপালগঞ্জ থানায় একটি মামলা হয় (মামলা নং-০৫, তাং-১১-০৩-৭৩, জিআর নং-৯৬/৭৩)। মামলায় মুক্তিযুদ্ধের হেমায়েত বাহিনী প্রধান প্রায়ত হেমায়েত উদ্দিন বীর বীক্রমসহ ২১ জনকে আসামি করা হয়। এদের মধ্যে বর্তমানে চারজন জীবিত রয়েছেন।

এদিকে, জীবনের নিরাপত্তায় মামলার বাদী লুৎফর রহমান গঞ্জরের কোনো তৎপরতা না থাকায় নিহত কমলেশ বেদজ্ঞর মেয়ে নারী নেত্রী সুতাপা বেদজ্ঞ বাদী হতে আবেদন করেন। পরে সুপ্রিম কোর্ট আবেদন মঞ্জুর এবং হাইকোর্টের দেয়া স্থাগিতাদেশ খারিজ করায় মামলাটি আবারো গোপালগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারিক কাজ শুর হবে।

নিহত বীর মুক্তিযোদ্ধা কমলেশ বেদজ্ঞের মেয়ে সুতপা বেদজ্ঞ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ১৯৭৩ সালের ১০ মার্চ হেমায়েত বাহিনীর প্রধান প্রয়াত হেমায়েতের নেতৃত্বে দুর্বৃত্তরা বাবাসহ চার বীর মুক্তিযোদ্ধাকে কুপিয়ে হত্যা করে। দীর্ঘ ৪৮ বছর ধরে আসামিরা কৌশলে মামলার বিচার কাজ বন্ধ রাখে। সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট স্থাগিতাদেশ খারিজ করায় গোপালগঞ্জ জেলা জজ আদালতে আবারো বিচার কাজ শুরু হবে। আশা করি আমরা বিচার পাবো।

মামলার আইনজীবী ও গোপালগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে জিপি হাজি অ্যাডভোকেট দেলোয়ার হোসেন সরদার জাগো নিউজকে বলেন, মামলার বাদী লুৎফর রহমানের তৎপরতা কম থাকায় নিহত কমলেশ বেদজ্ঞর মেয়ে সুতাপা বেদজ্ঞ বাদী হতে আবেদন করেন। সুপ্রিম কোর্ট তার আবেদন মঞ্জুর এবং মামলার উপর হাইকোর্টের দেয়া স্থাগিতাদেশ খারিজ করায় মামলাটি আবারো গোপালগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারিক কাজ শুর হবে।

এএইচ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।