রাজবাড়ীতে বেড়েই চলেছে সংক্রমণ-মৃত্যু
রাজবাড়ীতে করোনা সংক্রমণের হার উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। তবে করোনার এক বছর হয়ে গেলেও উন্নতি হয়নি করোনার চিকিৎসা ব্যবস্থার। বাড়েনি মানুষের মধ্যে সচেতনতাও। ফলে প্রতিদিনই জেলায় বাড়ছে করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা।
চলতি মাসের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ৫২০ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১৯৩ জনের করোনা পজিটিভ পাওয়া গেছে। বর্তমানে রাজবাড়ীতে সংক্রমণের হার ২৯-৩০ শতাংশ।
জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা তিন হাজার ৭৮৫ জন এবং সুস্থ হয়েছেন তিন হাজার ৫২৯ জন। মোট সংক্রমণের অর্ধেকের বেশি সদর উপজেলায় এবং সবচেয়ে কম কালুখালীতে। এখন পর্যন্ত সদরে আক্রান্তের সংখ্যা দুই হাজার ৬৬, পাংশায় ৮৪০, বালিয়াকান্দিতে ৩৩২, গোয়ালন্দে ৩০৬ ও কালুখালীতে ২৪১জন।
মৃত ৩৪ জনের মধ্যে সদরে ১৮, পাংশায় ৯, কালুখালীতে তিন এবং দুইজন করে রয়েছে বালিয়াকান্দি ও গোয়ালন্দে।
এদিকে করোনার এক বছর অতিবাহিত হলেও জেলার কোথাও নাই আইসিইউ ও ভেন্টিলেশন সুবিধা। রয়েছে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সুবিধা। চিকিৎসার জন্য জেলা সদর হাসপাতালে ৩০ শয্যাসহ প্রতিটি উপজেলায় পাঁচটি করে মোট ৫০টি বেড রয়েছে। রোগীর অবস্থা গুরুতর হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর বা ঢাকার হাসপাতালগুলোতে পাঠানো হয়।
রাজবাড়ীর সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইব্রাহিম টিটোন বলেন, গতমাসে রাজবাড়ীতে সংক্রমণের হার ছিল ২২ ভাগ, আর এ মাসে ২৯ ভাগ। করোনা রোগীদের চিকিৎসায় সদর হাসপাতালসহ জেলায় ৫০টি বেড রয়েছে। আক্রান্তের হার অধিক হলে পুরো হাসপাতালটি করোনা হাসপাতাল হিসাবে ব্যবহারের পরিকল্পনা আছে। জনসমাগম, বিয়েসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের কারণে সংক্রমণের হার বেড়েছে।
তিনি আরও বলেন, চিকিৎসায় আগের থেকে কিছুটা উন্নতি হয়েছে। যেমন সদর হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন চালু করা হয়েছে। পর্যাপ্ত অক্সিজেন ও পিপি আছে। তবে জেলার কোথাউও আইসিইউ ও ভেন্টিলেশন নেই। রোগীর অবস্থা গুরুতর হলে ফরিদপুরে রেফার্ড করা হয়।
এছাড়া করোনার টিকা প্রদান কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। প্রথম পর্যায়ের আসা ৩৬ হাজার ডোজ শেষে এখন দেয়া হচ্ছে দ্বিতীয় ডোজ। জেলায় দ্বিতীয় ডোজ হিসাবে এসেছে ২৪ হাজার টিকা।
রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের করোনা ইউনিট ও টিকা কেন্দ্রের ইনচার্জ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, করোনা ইউনিটে কিছু রোগী ভর্তি রয়েছে। বর্তমানে রাজবাড়ীতে সেন্ট্রাল অক্সিজেন ও আইসিইউ নাই। তবে সেন্ট্রাল অক্সিজেনের কাজ চলছে, যা শেষ পর্যায়ে।
তিনি আরও বলেন, করোনা রোগীদের জন্য পর্যাপ্ত অক্সিজেন সিলিন্ডার ও ১০টি মেশিন রয়েছে। রোগীর অবস্থা সর্বোচ্চ খারাপ হলে ইউনিটের চিকিৎসকের পরামর্শে রেফার্ড করা হয় অন্য জায়গায়।
অন্যদিকে রাজবাড়ীতে সংক্রমণের হার বাড়তে থাকায় জনগণকে সচেতন করতে বিচ্ছিন্নভাবে জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও জেলা আওয়ামী লীগের কার্যক্রম চলছে। চলছে জেলা প্রশাসনের অভিযান, পুলিশের মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ ও জেলা আওয়ামী লীগের মাইকে প্রচারণা।
রুবেলুর রহমান/এসএমএম/জেআইএম