মার্কেটের বাইরে তালা ভেতরে খোলা
অডিও শুনুন
লকডাউন অমান্য করে চাঁদপুরে বিভিন্ন মার্কেটে চলছে বেচা-কেনা। যদিও বাইরে থেকে বোঝার উপায় নেই ভেতরে নির্বিঘ্নে খোলা আছে তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
সরকার শুধুমাত্র নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী সংগ্রহের জন্য সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত কাঁচামাল ও অন্যান্য স্টেশনারির দোকান খোলা রাখার অনুমতি দিয়েছে। বিপণিবিতানগুলোর বিষয়ে আগামী রোববার সিদ্ধান্ত হওয়ার কথা রয়েছে।
বেশ কয়েকদিন কাপড় ব্যবসায়ীরা দোকান খোলার বিষয়ে আন্দোলন করে আসলেও সরকার এ বিষয়ে এখনও অনড় অবস্থানে রয়েছে। তবে সরকারের সেই সিদ্ধান্ত অমান্য করে চাঁদপুরের কয়েকটি মার্কেট বাইরে থেকে বন্ধ রেখে ভেতরে ব্যবসায়িক কার্যক্রম চলমান রেখেছে কর্তৃপক্ষ। ইতোমধ্যে এমন ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় আনার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়েছে।
ভ্রাম্যমাণ আদালত এদিন লকডাউন বাস্তবায়ন ও করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি ও মাস্ক পরিধান নিশ্চিতে মার্কেটসহ বিভিন্ন স্থানে সাতটি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ৫৫টি মামলায় মোট ৪০ হাজার ৪শ টাকা জরিমানা আদায় করেন।
সরেজমিনে বৃহস্পতিবার এমনই ঘটনা নজরে এসেছে। চাঁদপুরের স্বনামধন্য কাপড়ের মার্কেট ‘মীল শপিং’ ও ‘ফয়সাল শপিং কমপ্লেক্সে’ এই ধরনের ঘটনা ঘটতে দেখা গেছে। এই মার্কেটগুলোর বাইরে গেটে তালা দেয়া থাকলেও ভেতরে দোকান খুলে রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছিলেন কিছু ব্যবসায়ী। এতে যেমন বাড়ছে করোনা আক্রান্তের ঝুঁকি তেমনি সাধারণ মানুষের মধ্যে লকডাউন অমান্য করে ঘরের বাইরে যাওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষ করে ঈদ সামনে থাকায় ক্রেতাদের এই মুহূর্তে কেনাকাটার যথেষ্ট আগ্রহ রয়েছে। আর সেই সুযোগটি কাজে লাগাচ্ছেন এক শ্রেণির ব্যবসায়ী।
যদিও ব্যবসায়ীরা ঈদ উপলক্ষে লাখ লাখ টাকার মালামাল ইতোমধ্যে তাদের প্রতিষ্ঠানে সংগ্রহ করে রেখেছেন। যা বিক্রি করতে না পারলে তাদের বিশাল ক্ষতি হয়ে যাবে বলে তারা দাবি করেন। কেননা গত বছরও এই সময় লকডাউন থাকার কারণে অনেক ব্যবসায়ী বিশালক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাই গতবছরের লোকসান এবছর পোষানোর চিন্তা নিয়ে তারা আবারও নতুন কাপড় সংগ্রহ করেছেন। কিন্তু ঈদবাজার শুরু হওয়ার ঠিক আগ মুহূর্তে লকডাউন পড়ে যাওয়ায় এখন তাদের চোখেমুখে পড়েছে দুশ্চিন্তার ছাপ।
বস্ত্র ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সভাপতি আনোয়ার হোসেন বাবুল জানান, দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে যেখানে বেঁচে থাকাই কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে সেখানে ব্যবসায়ীদের আরেকটু সতর্ক হওয়া উচিৎ এবং সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান রেখে চলা উচিত।
তিনি আরও বলেন, গতবছর এই সময়ে লকডাউন থাকায় ব্যবসায়ীদের বিরাট ক্ষতি হয়েছে। তাই এবছর অনেকেই আশা করেছিলেন কিছুটা লোকসান কাটিয়ে উঠতে পারবেন। কিন্তু ঠিক এই সময় আবার লকডাউন হওয়ায় আমাদের ব্যবসায়ীরা অনেকটাই হতাশাগ্রস্ত। আর তাই তারা করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়েও এমন কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন।
তিনি বলেন, সরকার যেমনিভাবে অসহায় হতদরিদ্র মানুষের কথা চিন্তা করছে তেমনি আমাদের ব্যবসায়ীদের কথা চিন্তা করে ও শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে দিনে একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য হলেও মার্কেট খোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিলে ব্যবসায়ীরা উপকৃত হবে।
নজরুল ইসলাম আতিক/এফএ/এমএস