পিআইও-পিআইসির ঠেলাঠেলিতে ঈদ গেল তিনশ পরিবারের
প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) ও প্রকল্প সভাপতিদের ঠেলাঠেলিতে নাটোরের লালপুর উপজেলার দুই ইউনিয়নে কর্মসৃজন প্রকল্পের তিন শতাধিক শ্রমিক মজুরি পায়নি। ফলে তাদের ঈদ আনন্দ মাটি হয়ে গেছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, কদিমচিলান ও দুয়ারিয়া ইউনিয়নে ৪০ দিনের কর্মসৃজন প্রকল্পে তিন শতাধিক লোক কাজ করতেন। প্রকল্প সভাপতির স্বাক্ষর নিয়ে তৈরি বিল সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কাছে জমা দেন। তার মাধ্যমে শ্রমিকদের মজুরি নিজ নিজ ব্যাংক হিসাবে জমা হয়।
কদিমচিলান ও দুয়ারিয়া ইউপি চেয়ারম্যানের দাবি, শ্রমিকদের মজুরি বিল জমার পর পিআইও একটা অংশ দাবি করায় চেয়ারম্যানরা রাজি হননি। এ কারণে বিলে সই করেননি পিআইও।ফলে তিন শতাধিক শ্রমিক ৬০ দিনের মজুরি পায়নি।
দুয়ারিয়া ইউনিয়নে কর্মরত শ্রমিক উজির সরকার জানান, ৪০ দিন পর পর মজুরি তুলে সংসার চালান। ঈদের খরচও মজুরি বিল থেকেই করার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু মজুরি পাইনি। ফলে ঈদের আনন্দ মাটি হয়ে গেছে।
একই ইউনিয়নের শ্রমিক আছান মোল্লা বলেন, ‘মজুরি না পাইয়া এখন বউ ছ্যালিক তিন বেলা খাওয়াতে পারছি না। ঈদের দিনও হয়তো না খায়া থাকতে হবি।’
প্রকল্প সভাপতি শারমিন আক্তার, আলাল উদ্দিন, ফজলুর রহমান জানান, বিল জমার পরও টাকা পাইনি। যে প্রকল্পে ৪৫-৫০ শ্রমিক কাজ করেছে। সেখানে পিআইও ৩৫-৪০ জনের টাকা দিতে চায়। এ অন্যায় আবদার তারা মানেননি।
কদিমচিলান ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড প্রকল্প সভাপতি কলিমুদ্দিন বলেন, খেটে খাওয়া অতিদরিদ্রদের মজুরি নিয়ে এভাবে ছিনিমিনি খেলা ঠিক হচ্ছে না।
কদিমচিলান ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সেলিম রেজা বলেন, অন্যায় আবদারে রাজি না হওয়ায় পিআইও বিল আটকে রেখেছেন।
দুয়ারিয়া ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম জানান, পিআইও বিল কাটছাঁট করে সুবিধা নিতে চাচ্ছেন। আমরা রাজি না। কারণ তিনি শ্রমিকদের দিয়ে যখন ইউনিয়নের বাইরে কাজ করান তখন ন্যায় অন্যায় দেখেন না।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান অন্যায় আবদারের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, প্রকল্প সভাপতিরা বিল দাখিল করেননি বলেই মজুরি আটকে গেছে। বিল না পেলে বিল পাস করবো কিভাবে? তবে ঈদের পরই মজুরি দেয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) শাম্মী আক্তার জানান, পিআইও অফিসে শ্রমিকদের বিল জমা পড়েনি।
চেয়ারম্যানদের বিল জমা দেয়ার দাবি প্রসঙ্গে বলেন, এ ব্যাপারে কেউ কিছু জানাননি। খোঁজ নিয়ে দেখবেন বলে জানান তিনি।
রেজাউল করিম রেজা/এএইচ/এমএস