হোটেলেই ঈদ কাটল ভারতফেরত ৬২২ বাংলাদেশির
যশোরের হোটেলেই ঈদ কাটল ভারতফেরত ৬২২ বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীর। তবে হোটেলে কোয়ারেন্টাইনের মাঝে তাদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগ করে নিয়েছে জেলা প্রশাসন। সকালে উন্নতমানের নাস্তা সেমাই ও দুপুরে পোলাও, মুরগি ও খাসির মাংস সরবরাহ করা হয়েছে।
করোনা প্রাদুর্ভাবে সীমান্ত বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর বেনাপোল দিয়ে বিশেষ অনুমতি নিয়ে গত ১৪ দিনে এরা দেশে ফিরেছেন। সরকার নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধির অংশ হিসেবে ১৪ দিনের প্রতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে তাদের এই হোটেলগুলোতে অবস্থান করতে হচ্ছে।
যশোর জেলা প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, গত ১ মে এবং পরবর্তীতে বেনাপোল বন্দর দিয়ে দেশে ফেরা করোনা নেগেটিভ বাংলাদেশিদের ঈদের দিন হোটেলেই থাকতে হচ্ছে।
যশোর জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, গত ১৭ দিনে (২৬ এপ্রিল থেকে ১২ মে) পর্যন্ত বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে দেশে প্রবেশ করেছেন প্রায় দুই হাজার ৮০০ বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী।
সূত্র জানিয়েছে, ঈদের দিনে যশোর শহরের হোটেলগুলোতে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ৩১২ জন, ঝিকরগাছার গাজীর দরগাহে ১০ জন এবং বেনাপোলের হোটেলগুলোতে আরও ৩০০ জন। সবমিলিয়ে যশোরে ৬২২ জনের ঈদ কেটেছে কোয়ারেন্টাইনে।
ভারতফেরত এই পাসপোর্টধারীদের কোয়ারেন্টাইনে রাখার জন্য যশোর জেলায় ২৯টি হোটেল রিকুইজিশন করেছে জেলা প্রশাসন। এরমধ্যে শহরের ১৬টি হোটেল রয়েছে। এগুলো হলো-যশোর শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কের থ্রি-স্টার মানের আবাসিক, হোটেল জাবির ইন্টারন্যাশনাল, হোটেল ওরিয়ন, হোটেল হাসান ইন্টারন্যাশনাল, হোটেল সিটি প্লাজা, হোটেল ম্যাগপাই, হোটেল আরএস, হোটেল মনিহার, হোটেল সোনালী, হোটেল শাহরিয়ার, হোটেল সিটি, হোটেল বলাকা, হোটেল নয়ন, হোটেল নিউওয়ে, হোটেল ম্যাক্স, হোটেল প্রিন্স।
বেনাপোলে নেয়া হয়েছে আরও ১৩টি হোটেল। এগুলো হলো-রজনীগন্ধা, পোর্টভিউ, অ্যারিস্টোকেট, জুয়েল আবাসিক, চৌধুরী হোটেল, নিশাদ হোটেল, ফ্রেশ হোটেল, নাহিদ হোটেল, হোটেল সানসিটি, মৌ হোটেল, হোটেল সিটি, বেনাপোল পর্যটন ও রহমানিয়া হোটেল। পাশাপাশি রয়েছে ঝিকরগাছার গাজীর দরগাহ মাদরাসা।
এদিকে, জেলা প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে, যশোরের হোটেলে থাকা ভারতফেরতদের ঈদের দিন সকালে নাস্তা হিসেবে সেমাই ও ফিরনি সরবরাহ করা হয়েছে। দুপুরের খাবারে দেয়া হয়েছে পোলাও, মুরগির রোস্ট, গরু/খাসির মাংস, ফল ইত্যাদি। শহরের হোটেলগুলোতে খাবার সরবরাহ করেছে জেলা প্রশাসন।
ঝিকরগাছার গাজির দরগাহে কোয়ারেন্টাইনে থাকাদের কিছুদিন ধরে খাবার সরবরাহ করছে ডিভাইন গ্রুপ। ঈদের দিনও সেখানে তারাই খাবার সরবরাহ করেছে। আর বেনাপোলে থাকাদের সকালে নাস্তা দিয়েছেন শার্শার সংসদ সদস্য শেখ আফিল উদ্দিন। ঈদের দিন দুপুরে তাদের খাবার সরবরাহ করেছেন বেনাপোলের মেয়র আশরাফুল আলম লিটন। রাতে হোটেল কর্তৃপক্ষ তাদের খাবার সরবরাহ করছে।
যশোরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী সায়েমুজ্জামান বলেন, হোটেলে কোয়ারেন্টাইনে থাকা পাসপোর্টযাত্রীদের জন্য ঈদের দিন সেমাই, ফিরনি, পোলাও, মাংসসহ উন্নতমানের খাবার সরবরাহ করা হয়েছে।
মিলন রহমান/এসআর/এমএস