ধর্ষণের শিকার নারী করোনা নেগেটিভ, কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড়া পেলেন
খুলনায় কোয়ারেন্টাইনে থেকে ধর্ষণের শিকার হওয়া সেই নারীর করোনা পরীক্ষার ফলাফল নেগেটিভ এসেছে। তার বোন এসে তাকে বাড়ি নিয়ে যান।
বৃহস্পতিবার (২০ মে) খুলনা জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার দেবাশীষ বসাক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘বুধবার (১৯ মে) সন্ধ্যায় তার করোনা পরীক্ষার ফল জেলা প্রশাসনের হাতে আসে। পরে রাতেই ওই মেয়েকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।’
এর আগে মঙ্গলবার রাতে নগরের পিটিআই কোয়ারেন্টাইন কেন্দ্রে ওই নারী আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন। সে সময় কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে থাকা অন্যরা এবং নারী পুলিশ সদস্যরা তাকে রক্ষা করেন।
জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা এবং পুলিশের একটি সূত্র জানায়, বুধবার ওই নারীর কোয়ারেন্টাইন ১৪ দিন পূর্ণ হয়। কিন্তু সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৪ তম দিনে করোনা পরীক্ষা করতে হয়। ওই দিন বিকেলে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ডাক্তারি পরীক্ষার পর ওই নারীকে আবার কোয়ারেন্টাইন কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। তখন ওই নারী তাকে সেখান থেকে ছেড়ে দেয়ার দাবি জানান।
আইনগত কারণে তার দাবি পূরণ করা যায়নি। পরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে তিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। বিষয়টি টের পেয়ে ওই কেন্দ্রে থাকা অন্যান্য নারী ও নারী পুলিশ সদস্যরা তাকে নিবৃত্ত করেন।
খুলনার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইউসুপ আলী বলেন, ‘ওই নারী প্রথম দিন থেকেই কোয়ারেন্টাইন থেকে ছেড়ে দেয়ার জন্য বলতেন। একপর্যায়ে তাকে ছেড়ে না দিলে ভবন থেকে লাপ দেয়ার হুমকি দিয়েছিলেন।’
ধর্ষণ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) আবু সাইদ বলেন, ‘বুধবার দুপুরে ওই তরুণীর প্রয়োজনীয় ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। এ ছাড়া অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যের ডিএনএ টেস্ট করার জন্য আদালতে আবেদন করা হয়েছে। দু-এক দিনের মধ্যে হয়তো অনুমতি মিলবে। আদালতে অনুমতি পাওয়া গেলে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এনে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হবে।’
খুলনা নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (দক্ষিণ) সোনালী সেন জানান, মেয়েটি ওই ঘটনা ঘটার আগ থেকেই একটু আপসেট ছিল। তিনি কোয়ারেন্টাইন মানতে চাচ্ছিলেন না। প্রথমদিকে খাওয়া দাওয়াও ঠিকমতো করতেন না। বারবার সন্তানদের কাছে যেতে চাইতেন।
পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও জানান, অভিযুক্ত এএসআই মোকলেছুর রহমান জেলহাজতে আছেন। তার বিরুদ্ধে পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে।
অভিযুক্ত মোকলেছুর রহমান খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) কোর্ট সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি খুলনার পিটিআইয়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন সেন্টারে ১ মে থেকে দায়িত্ব পালন করছিলেন। প্রাথমিক তদন্তের পর ওই পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
আলমগীর হান্নান/এসজে/এমকেএইচ