একমাসে খুলনা বিদ্যুৎকেন্দ্রে ৮৫ চীনা নাগরিকের করোনা শনাক্ত
একমাসে খুলনা বিদ্যুৎকেন্দ্রে কর্মরত ৮৫ চীনা নাগরিক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এদেরমধ্যে ১৯ জন সুস্থ্য হয়েছেন।
এদিকে করোনা শনাক্ত হওয়ার পরও তারা প্রকাশ্যে চলাচল করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের করোনা ল্যাব সূত্রে জানা গেছে, গত ১৬ মে নির্মিতব্য ৩৩০ মেগাওয়াট কেন্দ্রে কর্মরত ৯৭ জনের করোনা পরীক্ষা করার জন্য নমুনা নেয়া হয়। ১৮ মে তাদের রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়। এরমধ্যে ৪২ জনের করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে।
খুলনা বিদ্যুৎকেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, গত ২২ এপ্রিল প্রথম ১০ চীনা নাগরিকের করোনা পরীক্ষা করা হয়। এরমধ্যে আটজনের করোনা পজিটিভ আসে। কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিক তিনজনকে উন্নত চিকিৎসা জন্য ঢাকা পাঠিয়ে দেন। আক্রান্ত অন্য পাঁচজনকে খুলনা বিদ্যুৎকেন্দ্রের অভ্যন্তরে আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসা দেয়া হয়।
জানা যায়, খালিশপুরে খুলনা বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৩৩০ মেগাওয়াট ডুয়েল ফুয়েল কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্ল্যান্টে প্রায় ১৮৫ চীনা নাগরিক কাজ করছেন।
২০১৮ সালে ৩৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্ল্যান্টটির কাজ শুরু হয়। এ প্রজেক্টে বাঙালি শ্রমিক রয়েছেন ৫০০-৬০০ জন।
এছাড়াও প্রতিদিন প্রায় ২০০ শ্রমিক এ প্রজেক্টে কাজ করে থাকেন।
কর্মরত শ্রমিক ইসমাইল হোসেন বলেন, শুনেছি প্রজেক্টে কর্মরত চীনাদের মধ্যে করোনা সংক্রমণ বারছে। কিন্তু আমাদের উপায় নেই। প্রতিদিনই চীনাদের সঙ্গে কাজ করতে হচ্ছে। এরমধ্যে কার করোনা হয়েছে, আর কার হয়নি- এটি বোঝার উপায় নেই।
বারেক হোসেন নামে স্থানীয় একজন ব্যবসায়ী অভিযোগ করেন, প্রতিদিনই চীনাদের বাইরে বের হতে দেখি। এতে আমরা ভয়ে থাকি। করোনা সংক্রমণ নিয়ে কেউ যদি বাইরে আসে সেটি বোঝার উপায় নেই।
পাওয়ার প্ল্যান্টের ডেপুটি প্রজেক্ট ডিরেক্টর জাহিদ হোসেন বলেন, গত এক মাসে (১৮ এপ্রিল থেকে ১৮ মে) প্রজেক্টে কর্মরত ৮৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এদের মধ্যে ১৯ জনের করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট এসেছে। আক্রান্তরা হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন।
তিনি আরও বলেন, আক্রান্ত কেউ কাজে অংশ নেয়নি। তারা সকলেই করোনার টিকা নিয়েছেন।
খুলনার সিভিল সার্জন নিয়াজ মোহাম্মদ বলেন, বিদ্যুৎ প্রজেক্টে কর্মরত করোনা আক্রান্ত চীনারা হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন। তাদের করোনা আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি দেখার জন্য আইইডিসিআর’র খুলনা বিভাগীয় কো-অর্ডিনেটর তদন্তের জন্য সেখানে গেছেন।
রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) খুলনা বিভাগীয় কো-অর্ডিনেটর ডা. হাসনাইন শেখ জানান, বৃহস্পতিবার বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তিনি প্রজেক্টে পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানকার চীনা কমিউনিটিতে ঢুকতে দেয়া হয় না। যা কথা বলার তা ফোনেই বলতে হয়েছে।
তাদের নিজস্ব চিকিৎসকও রয়েছে। তবে আক্রান্ত চীনারা কাজে অংশ নিচ্ছেন কিনা বিষয়টি যাচাই করা সম্ভব হয়নি বলে জানান তিনি।
আলমগীর হান্নান/এসএমএম/এমএস