‘স্বপ্নের সড়কে’ ছুটে আসছেন হাজারো মানুষ

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি কিশোরগঞ্জ
প্রকাশিত: ০৫:৪৯ পিএম, ০৩ জুন ২০২১

হাওরের বিস্ময় হিসেবে পরিচিত কিশোরগঞ্জের ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম অল-ওয়েদার সড়ক। হাওরবাসীর স্বপ্নের এ সড়কটি পরিণত হয়েছে পর্যটন কেন্দ্রে। দৃষ্টিনন্দন সড়কটি দেখতে ছুটে আসছেন হাজার হাজার মানুষ। উপভোগ করছেন প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য।

দিগন্ত বিস্তৃত হাওরের মাঝখান দিয়ে পিচঢালা প্রশস্ত উঁচু রাস্তা। দুই পাশে সবুজের সমারোহ। সড়কে সাঁই-সাঁই করে চলছে ছোট-বড় যানবাহন। দূর থেকে মনে হবে যেনো পাকা রাস্তা মিশে গেছে দূর নীল দিগন্তে।

jagonews24

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি কিশোরগঞ্জের হাওর বর্ষার মতো গ্রীষ্মেও উজাড় করে দেয় রূপের ছটা। আর হাওরের সৌন্দর্য যেনো বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে এ সড়কটি। এখনও বর্ষার পানি আসেনি। রাস্তার দুই পাশে কেটে ফেলা ধান গাছের সবুজ মিলিয়ে যায়নি। তাতে কি! প্রখর রোদেই যেনো স্বপ্নমোড়কে অন্যরকম এক মোহে ঘুরে বেড়ান পর্যটকরা।

ভাটির টানে এখানে ছুটে আসেন সৌন্দর্য পিপাসুরা। স্বপ্নের সড়কে ছুটছেন হাজার হাজার মানুষ। ছোট-বড় যানবাহনে করে ঘুরে বেড়াচ্ছেন এখানে-সেখানে। রাস্তার পাশের চায়ের কাপে ঝড় তুলছেন অনেকে। সুন্দর মুহূর্তটি ক্যামেরার ফ্রেমে ধরে রাখতে ব্যস্ত অনেকে। বড়দের হাত ধরে এসেছে শিশুরা। করোনায় বছর ধরে ঘরবন্দি থেকে ঈদ উৎসবে হাওরের নির্মল বাতাসে সামান্য স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে এখানে ছুটে আসতেন তারা।

jagonews24

সড়কটি হাওরবাসীর কাছে পরিচিতি পেয়েছে ‘হাওরের বিস্ময়’ কিংবা ‘স্বপ্নের সড়ক’ নামে। সারা বছর চলাচল উপযোগী এ সড়ক কমিয়ে দিয়েছে যোগাযোগের দূরত্ব। সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে কর্মসংস্থানের।

বৃদ্ধা মা, স্ত্রীসহ স্বজনদের নিয়ে মিঠামইন অল-ওয়েদার সড়কে ঘুরতে আসেন ব্যবসায়ী মো. শফিকুল ইসলাম শিপলু। তিনি বলেন, করোনা থেকে কিছুদিন আগে মা সুস্থ হয়েছেন। এ ছাড়া সবাই ঘরবন্দি থেকে হাঁফিয়ে উঠেছি। তাই একটু নির্মল আনন্দ পেতে এখানে ছুটে এসেছি। এ সড়ক নিজের চোখে না দেখলে এর সৌন্দর্য কেউ বুঝতে পারবেন না।

jagonews24

নরসিংদীর রাজু মিয়া স্ত্রীকে নিয়ে ঘুরতে এসেছেন এখানে। অষ্টগ্রাম উপজেলার বাতশালা সেতুতে তার সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, বর্ষাকালেও তিনি এখানে এসেছেন। শুষ্ক মৌসুমে এর সৌন্দর্য অন্যরকম। তবে বসার মতো কোনো জায়গা নেই, নেই বাথরুমের ব্যবস্থা।

মিঠামইনের কামালপুর গ্রামের রতন মিয়া আগে কৃষি শ্রমিক ছিলেন। এখন এ সড়কে অটোরিকশা চালিয়ে ভালো আছেন। সড়কটি হওয়ায় তার মতো শত-শত মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের একান্ত ইচ্ছায় নির্মিত এ সড়ক ঘিরে হাওরে পর্যটন শিল্পের বিকাশে নানা উদ্যোগের কথা জানালেন তারই ছেলে রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক এমপি।

jagonews24

তিনি বলেন, হাওরে পর্যটনের বিকাশে সব কিছুই হবে। তবে হাওরের ক্ষতি করে নয়। প্রয়োজনে ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রামে আবাসিক হোটেল-মোটেল করা হবে।

এর আগে ২০২০ সালের ৮ অক্টোবর ৮৭৪ কোটি টাকা ব্যয়ে সড়ক ও প্রকৌশল বিভাগের উদ্যোগে ইটনা-মিঠামইন ও অষ্টগ্রাম উপজেলাকে সংযুক্ত করে নির্মিত সড়কটি উদ্বোধন করেন প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা।

নূর মোহাম্মদ/আরএইচ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।