ঝিনাইদহে প্রস্তুত ৭১ হাজার গরু

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ঝিনাইদহ
প্রকাশিত: ০২:৪৬ এএম, ৩০ জুন ২০২১

কোরবানি ঈদের বাজার ধরতে ঝিনাইদহের খামারিরা তাদের গরু-ছাগল প্রস্তুত করছেন। তবে সঠিক দাম নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন জেলার প্রায় ১৮ হাজার ছোট-বড় খামারি। তারা বলছেন, গত বছর কোরবানিতে গরুর দামে ধস নামে। এবার সঠিক দামের আশা করলেও করোনাভাইরাস এতে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে ধারণা খামারিদের।

যদিও জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদফতর বলছে, করোনার প্রভাব থাকলেও অনলাইনে গবাদি পশু বিক্রি হবে। ফলে ভারতীয় সীমান্তের জেলা ঝিনাইদহের চাষিরা সঠিক দাম পাবেন।

ঝিনাইদহের প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের হিসাব অনুযায়ী, জেলায় ছোট-বড় ও ব্যক্তি পর্যায়ে ক্ষুদ্র খামার রয়েছে ১৭ হাজার ৪৫০টি। এসব খামারে আসন্ন কোরবানির ঈদের জন্য প্রস্তুতকৃত গরু রয়েছে ৭১ হাজার ৪১৫টি। এছাড়া ছাগল ও ভেড়া রয়েছে ৫৪ হাজার ৪৪৪টি।

ঝিনাইদহে সরকারিভাবে বড় ধরনের কোনো খামার বা গরু মোটাতাজাকরণ প্রকল্প না থাকলেও গ্রামের স্বল্প আয়ের মানুষগুলো বাড়তি লাভের আশায় কোরবানিকে সামনে রেখে গরু-ছাগল লালন-পালন করে থাকেন। তবে গরু পালনে তারা কোনো ক্ষতিকারক ইনজেকশন ব্যবহার করেন না বলে দাবি করেন।

তাদের ভাষ্য, কৃষিকাজে তারা যে গম, খৈল ও ভুষি পেয়ে থাকেন, তা থেকেই গরুর খাবার যোগান দেন। এছাড়া মাঠের ঘাস তাদের গরু-ছাগলের প্রধান খাদ্য।

তারা আরও জানান, ঝিনাইদহ জেলা প্রাণিসম্পদ দফতরের নির্দেশনা অনুযায়ী গরুর পরিচর্যা করেন। সম্পূর্ণ দেশি খাবার দিয়ে তাদের গরু মোটাতাজা করা হয়।

গরুর গ্রাম বলে পরিচিত হরিণাকুন্ডের কুলবাড়ীয়ায় এ বছরও হাজারো গরু রয়েছে। হরিণাকুন্ডু উপজেলা থেকে মাত্র ৩ কিলোমিটার সড়ক পথে গেলে ফলসি ইউনিয়নে ২ ও ৩নং ওয়ার্ডে কুলবাড়িয়া গ্রাম। এ গ্রামে প্রায় তিন হাজার লোকের বসবাস। এখানে বাড়ি আছে পাঁচ শতাধিক। প্রায় প্রতিটি বাড়িতে রয়েছে দুই থেকে ২৫টি গরু। প্রতিবছর এই গ্রাম থেকে এক থেকে দেড় হাজার গরু কোরবানির বাজারে বিক্রি হয়ে থাকে।

এ গ্রামে বড় খামারি হলেন শামছুল আলী। বর্তমানে তার ২৪টি গরু রয়েছে। হরিয়ানা, নেপালি ও ক্রসবিড জাতের গরু রয়েছে। এরমধ্যে সব থেকে বড় গরুর ওজন ১৩শ' কেজি। দাম ভালো থাকলে এ বছর ছয়টি গরু ৩৫ থেকে ৪০ লাখ টাকায় বিক্রি করতে পারবেন বলে জানান তিনি।

কালীগঞ্জ উপজেলার রায়গ্রাম ইউনিয়নের মেগুরখিদ্দা গ্রামের সুমন হোসেন বলেন, ‌'এ বছর আমার সাতটি গরু রয়েছে। এরমধ্যে আসছে কোরবানিতে একটি গরু বিক্রি করব। ইতোমধ্যে গরুটি সাড়ে ৫ লাখ টাকা দাম উঠেছে। সাড়ে ৬ লাখ হলে ছেড়ে দেব।'

তিনি জানান, দুই বছর আগে দুই লাখ টাকা দিয়ে গরুটি কিনেছিলেন। গরুর পেছনে প্রতিদিন ৮০ থেকে এক হাজার টাকার খাবার লেগেছে।

ঝিনাইদহ জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার ডাক্তার আনন্দ কুমার অধিকারী জানান, করোনার প্রকোপ থাকলে গরু-ছাগলের বাজার অনলাইনভিত্তিক করা হবে। এ ক্ষেত্রে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের মাধ্যমে খামারিদের নাম-ঠিকানা ও গরুর ছবি সংগ্রহ করে অনলাইনে প্রচার করা হবে। ক্রেতারা নির্ধারিত ওয়েবসাইট থেকে ছবি দেখে খামারিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে পছন্দের পশুটি কিনতে পারবেন।

আগে গরু মোটাতাজাকরণে ক্ষতিকর ইনজেকশন ব্যবহার হতো। বর্তমানে দফতরের নজরদারি ও খামারিরা সচেতন হওয়ায় এখন কেউ আর ইনজেকশন দেয় না বলে জানান এই কর্মকর্তা।

আব্দুল্লাহ আল মাসুদ/জেডএইচ/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।