জরুরি ও জটিল রোগী ছাড়া বরিশাল মেডিকেলে না পাঠানোর নির্দেশ
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রতিদিনই রোগীর চাপ বাড়ছে। অতিরিক্ত রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। এ অবস্থায় বিভাগের ৬ জেলার সরকারি হাসপাতাল এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে জরুরি ও জটিল রোগী ছাড়া অন্য রোগীদের মেডিকেলে না পাঠাতে চিঠি দেয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয় থেকে ওই নির্দেশনা দিয়ে সম্প্রতি চিঠি পাঠানো হয়েছে।
শুক্রবার (৯ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে স্বাস্থ্য অধিদফতরের বরিশাল বিভাগীয় পরিচালক ডা. বাসুদেব কুমার দাস এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘বরিশাল বিভাগে করোনা পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে। চলতি (জুলাই) মাসে করোনা পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। করোনায় আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। করোনা ইউনিট ছাড়াও মেডিকেলের বিভিন্ন বিভাগে দেড় সহস্রাধিক রোগী ভর্তি রয়েছেন। তাই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ছোটখাটো কাটা-ছেড়া, জখম, সর্দি-কাশি, জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের না পাঠাতে লিখিতভাবে অনুরোধ করেছিল মেডিকেল কর্তৃপক্ষ। এর পরিপ্রেক্ষিতে জেলা ও উপজেলার সরকারি হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা দেয়া সম্ভব, এমন রোগীদের সেখান থেকে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে না পাঠাতে ৬ জেলার সিভিল সার্জন এবং উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাদের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে।’
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. সাইফুল ইসলাম জানান, হাসপাতালটি কাগজে-কলমে ৫০০ শয্যার। তবে বর্তমানে বিভিন্ন বিভাগে দেড় সহস্রাধিক রোগী ভর্তি আছেন। এছাড়া করোনা ইউনিটে ভর্তি আছেন ২৪৪ জন। বহির্বিভাগে গড়ে আড়াই হাজার রোগী দেখতে হচ্ছে চিকিৎসকদের। বিপুলসংখ্যক এই রোগীর বিপরীতে চিকিৎসক আছেন মাত্র ১০৬ জন।
ডা. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘হাসপাতালে এখন প্রতিদিন ৩৫০ থেকে ৪০০ জন রোগী ভর্তি হচ্ছেন। এর মধ্যে প্রায় ১৫ শতাংশ রোগী করোনা ও উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হচ্ছেন। প্রায় একই সংখ্যক রোগী ছোটখাটো কাটা-ছেড়া, জখম, সর্দি, কাশি, জ্বর নিয়ে ভর্তি হচ্ছেন। তাদেরকে জেলার সরকারি হাসপাতাল এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে এখানে পাঠানো হচ্ছে। এসব রোগীকে সেখানে রেখেই চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ করে তোলা সম্ভব। এরপরেও তাদেরকে বরিশালে পাঠানো হচ্ছিল। এতে করোনা ও জটিল রোগীদের চিকিৎসা কার্যক্রম কিছুটা হলেও ব্যাহত হচ্ছে। এসব বিষয় বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতরকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছিল। এরপর বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।’
সাইফ আমীন/এসএস/এমএস