শিশু সাব্বিরকে বাড়িতে নিয়ে গেলেন তার দাদা
মায়ের অপেক্ষায় করোনা ওয়ার্ডের সামনে সারাদিন বসে থাকা শিশু সাব্বির আহম্মেদ শাফিনকে বাড়ি নিয়ে গেছেন তার দাদা। শুক্রবার (১৬ জুলায়) সকালে তার দাদা আব্দুল কুদ্দুস ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল থেকে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যান সাব্বিরকে।
সাব্বির আহম্মেদ শাফিনের বয়স পাঁচ বছর। বাবার নাম সাইফুল ইসলাম। বাড়ি ঝিনাইদহ সদরের আড়ুয়াডাঙ্গা গ্রামে। তিনি একটি কসমেটিকস কোম্পানিতে চাকরি করেন।
শিশু সাব্বিরের মা মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়ে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি হন। মায়ের সঙ্গে হাসপাতালে আসে ছেলে সাব্বির। সাব্বিরের বাবা সাইফুল ইসলাম ছেলেকে গ্রামের বাড়ি দাদা-দাদির কাছে পাঠিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সাব্বিরের দাদা-দাদি করোনা সংক্রমণের ভয়ে তাকে রাখতে চাননি।
এদিকে মাকে ছাড়া শাফিনও বাড়িতে থাকতে পারত না। তাই মাকে করোনা সেন্টারে রেখে সারাদিন হাসপাতালের সামনে অপেক্ষা করত শিশু সাব্বির। রাত হলে ছেলের সঙ্গে বাবাও এখানে বসে অপেক্ষা করতেন। রাত হলে হাসপাতালের বারান্দা বা বেঞ্চে ঘুমিয়ে পড়তেন বাবা-ছেলে।
এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) ‘মায়ের অপেক্ষায় করোনা ওয়ার্ডের সামনে সারাদিন বসে থাকে শিশু সাব্বির’ শিরোনামে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ করে জাগোনিউজ২৪.কম।
প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হওয়ার পর বিষয়টি বাবা-মা ভাই-বোনসহ আত্মীয়-স্বজনদের নজরে আসে। এরপর শুক্রবার সকালেই তার দাদা সাব্বিরকে বাড়িতে নিয়ে যান।
সাব্বিরের বাবা সাইফুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, “আমার ছেলে তার দাদার সঙ্গে বাড়ি যাওয়ার সময় বলে গেছে, ‘বাবা, তুমি মাকে সঙ্গে করে বাড়ি নিয়ে আসবে’।”
তিনি আরও বলেন, নিউজের কমেন্ট দেখে আমি রীতিমতো থমকে গিয়েছিলাম। অনেকেই সাব্বিরের আম্মুর জন্য দোয়া করেছেন। এগুলো দেখে আমি চোখের পানি ধরে রাখতে পারিনি। সবাই দোয়া করবেন যেন সাব্বিরের আম্মু সুস্থ হয়ে সাব্বিরের কাছে ফিরে আসতে পারে। তবে, আমার স্ত্রীর চিকিৎসা করাতে গিয়ে ইতোমধ্যে অনেক টাকা খরচ হয়ে গেছে। এরই মধ্যে ২০ হাজার ঋণী হয়ে গেছি বলছিলেন সাব্বিরের বাবা সাইফুল ইসলাম।
আব্দুল্লাহ আল মাসুদ/এসআর/এএসএম