দুই বছর পড়ে আছে ভাঙা ব্রিজ, চলাচলে ভরসা ভাঙা সাঁকো
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে দুই বছর আগে ভেঙে যায় ফুলবাড়ি ব্রিজের একাংশ। সে সময় ব্রিজের দু’ধারে লাল কাপড় টানানো ছাড়া হয়নি কোনো সংস্কার। ফলে ব্রিজের পাশ দিয়েই বানানো বাঁশের সাঁকো। এখন জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে সেটিও। তবুও ঝুঁকি নিয়ে সাঁকো পার হচ্ছেন মানুষ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের বারোবাজার ফুলবাড়ি এলাকায় ভৈরব নদীর ওপর নির্মিত হয় ব্রিজটি। এ ব্রিজ দিয়ে ফুলবাড়ি, ঝনঝনিয়া, কাস্টভাঙা, বেলে ঘাটসহ বিভিন্ন গ্রাম এবং যশোরের চৌগাছা উপজেলার মানুষ বারোবাজার, কালীগঞ্জ এলাকায় যাতায়াত করতেন। পাশাপাশি জরুরি প্রয়োজন ও ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্যও ব্রিজটি ব্যবহার হতো।
এছাড়া দু-পাশের কৃষকের ক্ষেতের সবজি যশোরের চুড়ামনকাঠিসহ বিভিন্ন বাজারে পৌঁছাতেও ব্যবহার করা হতো ব্রিজটি। কিন্তু দুবছর আগে ভৈরব নদীর এই অংশে খনন করা হয়। বর্ষায় পানির চাপ বেড়ে যাওয়ায় স্রোতে ভেঙে পড়ে যায় ব্রিজের একাংশ।
কিছুদিন পর ব্রিজের পাশেই কোনোরকম একটি সাঁকো তৈরি করা হয়। সেটিও ভেঙে গেছে। এ অবস্থায় গত একমাস আগে রাতে মোটরসাইকেল নিয়ে ব্রিজ পার হওয়ার সময় নদীতে পড়ে দুজনের মৃত্যু হয়। বর্তমানে সাবধানতার সঙ্গে কোনোরকমে মানুষ পার হলেও বন্ধ রয়েছে যানবাহন ও ভ্যান, রিকশা চলাচল।
এ পথ দিয়ে ট্রাক্টর নিয়ে বিভিন্ন গ্রামে চাষাবাদ করতে যাওয়া ইসরাইল হোসেন জানান, এই ব্রিজ ভেঙে থাকার কারণে পার্শ্ববর্তী ঝনঝনিয়াসহ অন্যান্য গ্রামে যেতে অনেক পথ ঘুরতে হয়। ফলে সময় ও অর্থের ব্যয়ও হয় অনেক বেশি।

ঝনঝনিয়া গ্রামের আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, আমার বাড়ি থেকে বাজার মাত্র দুই কিলোমিটার। কিন্তু এই ব্রিজ ভাঙার কারণে পাঁচ কিলোমিটার ঘুরে যেতে হয়। ক্ষেতের কাঁচা তরকারি বারোবাজার ও যশোরের চুড়ামনকাঠি বাজারে নিতে অনেক সমস্যা হয়। তাই ব্রিজটি যদি দ্রুত মেরামত করা হয় কিংবা নতুন তৈরি করা হয়, তাহলে আমাদের অনেক দুর্ভোগ লাঘব হতো।
একই এলাকার বাসিন্দা মিজানুর রহমান বলেন, এই এলাকায় বড় বড় কথা বলার অনেকেই আছে। কিন্তু কাজের কাজ কেউ করে না। যদি কেউ কাজ করার মতো থাকতো তাহলে গুরুত্বপূর্ণ এই ব্রিজটি বেহাল অবস্থায় এতো দিন পড়ে থাকতো না।
এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী রুহুল ইসলাম জানান, চলাচলের অযোগ্য ব্রিজটিতে অচিরেই পুনর্নির্মাণের কাজ শুরু হবে। টেন্ডার হয়েছে। কাজটি পেয়েছেন ঝিনাইদহের ঠিকাদার মিজানুর রহমান।
তিনি আরও বলেন, ব্রিজটি পরিদর্শন করে ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়া হবে। ২৫ মিটার প্রস্থের ভৈরব নদীর ওপর অবস্থিত ৬০ মিটার দৈর্ঘ্যের এ ব্রিজের পুনর্নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ কোটি ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
আব্দুল্লাহ আল মাসুদ/এসজে/এএসএম