ডাকঘরে ‘ফার্নিচার কারখানা’ গড়েছেন পোস্টমাস্টার
কালের বিবর্তনে জৌলুস হারিয়েছে ডাকঘর। ডিজিটাল যুগে কমেছে ডাকে চিঠির আদান-প্রদান। ফলে দেশের বেশিরভাগ ডাকঘরেই অলস সময় কাটে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। এবার ডাকঘরে রীতিমতো ‘ফার্নিচার কারখানা’ গড়ে তুলেছেন খোদ পোস্টমাস্টার, যা নিয়ে ক্ষুব্ধ সেবাগ্রহীতরা।
ঘটনাটি ঘটেছে সুনামগঞ্জের ছাতকে। উপজেলার একমাত্র ডাকঘরের ভেতরে ঢুকলেই চোখে পড়বে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা কাঠ, যা দিয়ে পোস্টমাস্টার রফিকুল ইসলাম নিজের মেয়ের বিয়ের জন্য ফার্নিচার তৈরি করছেন। বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হলেই শুরু হয় ফার্নিচার তৈরির কাজ, চলে গভীর রাত পর্যন্ত। ফার্নিচার তৈরির কাজ করতে আসেন বহিরাগত শ্রমিকরা।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, চলতি বছর ছাতক ডাকঘরে পোস্টমাস্টার হিসেবে যোগদান করেছেন রফিকুল ইসলাম। ডাক অফিসের পেছনেই স্টাফ কোয়ার্টারে থাকেন তিনি। সেই কোয়ার্টারের একটি কক্ষ চঞ্চল মিয়া নামে একজন বহিরাগতকে ভাড়া দিয়েছেন পোস্টমাস্টার রফিকুল। এবার ডাকঘরেই গড়েছেন ফার্নিচার কারখানা।
সরেজমিন ছাতক ডাকঘরে দেখা গেছে, ডাকঘরের অধিকাংশ জায়গায় বিভিন্ন সাইজের দামি কাঠ রাখা হয়েছে। পেছনের দরজা খোলা থাকায় দেখা যায়, সেখানেও বিভিন্ন ফার্নিচার তৈরির অংশ সাজিয়ে রাখা হয়েছে। সেখানে ফার্নিচার তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জামও পড়ে আছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আকমল আলী বলেন, ‘ডাকঘরে রাষ্ট্রীয় অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র থাকে। সেখানে ফার্নিচার করাখানা গড়ে তুললে, তা মানা যায় না। বাইরের লোকজন এসে সেখানে ফার্নিচার বানাচ্ছেন, যেকোনো সময় গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্রও খোয়া যেতে পারে। বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে নেওয়ার দাবি জানাই।’
ডাকঘরে কাঠ রাখা ও ফার্নিচার তৈরির বিষয়ে জানতে চাইলে পোস্টমাস্টার রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমার মেয়ের বিয়ের জন্য এসব কাঠের ফার্নিচার তৈরি করছি। নিরাপত্তা ও চোখের সামনে কাজ করিয়ে নেওয়ার জন্য ডাকঘরের ভেতরে কাঠ রেখেছি।’
তিনি বলেন, ‘এটি আমার অফিস। এ অফিসের সব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করার অধিকার আমার রয়েছে। এ জন্য আমি কাউকে জবাবদিহি করতে বাধ্য না।’
লিপসন আহমেদ/এএএইচ/জিকেএস