ভিন্ন দিকে মোড় নিচ্ছে মাগুরার ৪ হত্যাকাণ্ড

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি মাগুরা
প্রকাশিত: ০৮:৪৮ এএম, ০৪ নভেম্বর ২০২১

আসন্ন ১১ নভেম্বর মাগুরা সদর উপজেলার জগদল ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দুই মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষে চার হত্যাকাণ্ডের ঘটনার তদন্তে উঠে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিশের গোপন একটি সূত্র বলছে, চারটি খুনের পেছনেই ছিল একই পক্ষের হাত। চতুর্থ খুনটি নিজেদের বাঁচাতে।

গত ১৫ অক্টোবর বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে জগদল গ্রামে দুই ভাই কবির মোল্লা, সবুর মোল্লা ও চাচাতো ভাই রহমান মোল্লা এবং প্রতিপক্ষের ইমরান মোল্লা নিহত হন। ঘটনার তিনদিন পর ১৮ অক্টোবর নিহতদের ভাই আনোয়ার হোসেন, নজরুল ইসলাম মেম্বারকে প্রধান আসামি করে ৬৮ জনের বিরুদ্ধে এবং ঘটনার পাঁচ দিন পর ২০ অক্টোবর নিহত ইমরানের মা ৫২ জনকে আসামি করে মাগুরা সদর থানায় মামলা করেন।

ঘটনার দিন রাতে ৪ জনকে আটক করা হলেও মূল আসামিসহ অন্যরা থেকে যান ধরা ছোঁয়ার বাইরে। পরে মাগুরা সদর থানা থেকে ২৪ অক্টোবর এ মামলা পুলিশের ডিবিতে হস্তান্তর করা হয়।

মাগুরা ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন জানান, গত রোববার ঢাকার গাবতলী এলাকার একটি আবাসিক হোটেলে অভিযান চালিয়ে এ মামলার প্রধান আসামি নজরুল মেম্বারসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করে মাগুরা ডিবি পুলিশের একটি দল। এদের মধ্যে চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। আদালত নজরুল ও তুহিন হোসাইনের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। অন্যদিকে ইয়ামিন হোসাইন ও রিয়াজ হোসাইনকে দুই দিন করে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন।

তিনি আরও জানান, আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে নজরুলসহ অন্যরা ঘটনার পরিকল্পনা ও জড়িত ব্যক্তিদের সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। তবে তদন্তের স্বার্থে সেটা এখন প্রকাশ সম্ভব হচ্ছে না। আসামি জলিল শেখ ওরফে জালিম এ হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয়ে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।

হত্যাকাণ্ডের শুরু থেকেই পুলিশের ইমরান হত্যা নিয়ে সন্দেহ ছিল। সেই সন্দেহ এখন সত্যি হতে চলেছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, ইমরান হত্যার বিষয়টি একজন ব্যক্তির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির মাধ্যমে অনেকটাই নিশ্চিত হওয়া গেছে। প্রধান আসামিসহ দুজনের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। আশা করছি শিগগিরই ইমরান হত্যা রহস্যের জট খুলবে।

সোমবার (১ নভেম্বর) বিকেলে পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে মাগুরার পুলিশ সুপার মো. জহিরুল ইসলাম জানান, জগদলের ইউপি নিবার্চনকে কেন্দ্র করে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি পূর্বপরিকল্পিত। ঘটনার দুদিন আগে (১৩ অক্টোবর) রাতে নজরুল মেম্বারের বাড়িতে একটি বৈঠক হয় তার দলীয় লোকজনের উপস্থিতিতে। সেখান থেকেই এ হত্যার পরিকল্পনা হয়। ঘটনার দিন বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে সবুর মোল্লাসহ তার দলের অন্য কয়েকজন মিলে সৈয়দ হাসানের বাড়িতে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে তারা হামলার শিকার হন এবং আপন দুই ভাই সবুর মোল্ল্যা, কবির মোল্ল্যা ও চাচাতো ভাই রহমান মোল্ল্যা এবং প্রতিপক্ষের ইমরান হোসেনসহ চারজন নিহত হন

পুলিশ তিন ভাই হত্যা মামলায় ঘটনার দিন রাতে ৪ জন, পরে ২ জন এবং সর্বশেষ ঢাকায় অভিযান চালিয়ে ৫ জনসহ মোট ১১ জনকে গ্রেফতার করেছে। অপরদিকে ইমরান হত্যা মামলায় কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।

এফএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।