নলকূপের পাইপ থেকে গ্যাস বের হওয়া সেই এলাকা পরিদর্শন বাপেক্সের
বরিশালের হিজলা উপজেলার গুয়াবাড়িয়া ইউনিয়নের কোড়ালিয়া গ্রামে নলকূপের পাইপ থেকে গ্যাস বের হওয়া স্থানটি পরিদর্শন করেছে বাপেক্সের দুই সদস্যের কারিগরি দল।
শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) দুপুরে তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। দলের নেতৃত্ব দেন বাপেক্সের ব্যবস্থাপক (ভূতত্ত্ববিদ) তারিকুল আলম ভুইয়া। তার সঙ্গে ছিলেন সহকারী ব্যবস্থাপক (ভূতত্ত্ববিদ) আব্দুল মোমিন।
প্রাথমিকভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে রাষ্ট্রীয় সংস্থা বাপেক্সের ব্যবস্থাপক (ভূতত্ত্ববিদ) তারিকুল আলম ভুইয়া বলেন, আমরা আসার আগেই দুর্ঘটনার আশঙ্কায় স্থানীয়রা নলকূপের পাইপে বালু ফেলেছেন। এতে গ্যাসের চাপ অনেক কম। গ্যাসের চাপ কম হওয়ায় নমুনা নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে দেয়াশলাই ধরালে আগুন জ্বলছে। চাপ না বাড়লে নমুনা নেওয়া যাবে না। নমুনা পরীক্ষা করলে ধারণা পাওয়া যেত এখানে কত ঘনফুট বা কী ধরনের গ্যাস রয়েছে। তবে অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, নলকূপের পাইপ থেকে বায়োজেনিক গ্যাস বা জৈবগ্যাস বের হচ্ছে। কারণ এই অগভীর গ্যাস ভূপৃষ্ঠ থেকে মাত্র ২৫০ মিটার গভীরতায় অবস্থান করে। আর নলকূপের পাইপের গভীরতাও ৭০ ফুট বা ২১ মিটার।
বায়োজেনিক গ্যাস বা জৈবগ্যাস মূলত পানির জন্য খনন করা টিউবওয়েল (নলকূপ) মাধ্যমে পানির সঙ্গে উঠে আসে জানিয়ে তিনি বলেন, এটির মজুত ছোট, তা স্বল্প চাপে ও স্বল্পভাবে প্রবাহিত হয়। এর স্থায়িত্ব তুলনামূলকভাবে কম হয়। এই গ্যাস বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহৃত হয় না।
তবে গ্যাসের চাপ বাড়লে আবার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে বলে জানিয়েছেন ভূতত্ত্ববিদ তারিকুল আলম। তিনি বলেন, ‘স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বার ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের আগামী এক সপ্তাহ স্থানটি পর্যবেক্ষণে রাখতে বলা হয়েছে। এরমধ্যে নলকূপের পাইপে গ্যাসের চাপ বাড়লে আমাদের জানাতে বলা হয়েছে। তখন এসে পুনরায় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে।’
স্থানীয়রা জানান, কোড়ালিয়া গ্রামের ইসরাফল আকন তার ইরি ব্লকে সেচ দেওয়ার জন্য বুধবার (১৯ জানুয়ারি) সকালে বাড়ির দক্ষিণ পাশে মিস্ত্রি ও শ্রমিকদের দিয়ে নলকূপ স্থাপনের কাজ শুরু করেন। সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত শ্রমিকরা ৭০ ফুট বোরিং (গর্ত করা) করেন। কিন্তু পানি না ওঠায় তার আরও বোরিং করার সিদ্ধান্ত নেন। ঠিক ওই সময় পাইপ দিয়ে গ্যাস বের হওয়ার শব্দ হতে থাকে। গ্যাসের গন্ধের কারণে তাদের সন্দেহ হয়। তখন সেখানে দেয়াশলাই ধরালে আগুন জ্বলতে থাকে।
জমির মালিক ইসরাফল আকন বলেন, ৭০ ফুট গভীরে যাওয়ার পরও পানির দেখা পাওয়া যায়নি। পাইপ দিয়ে গ্যাস বের হচ্ছে। বুধবার রাতেই উপজেলা প্রশাসনকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে হিজলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বকুল চন্দ্র কবিরাজ জাগো নিউজকে বলেন, জায়গাটি আগামী সাতদিনের জন্য সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে। ওই গ্যাস থেকে যেন বড় কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে, সেজন্য জমির মালিককে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যেহেতু এটি গ্যাসের বিষয় তাই আশপাশের লোকজনকে এ বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে।
সাইফ আমীন/এসআর