কক্সবাজার সৈকতে মৃত মাছের ঢল, উৎস নিয়ে ধূম্রজাল

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি কক্সবাজার
প্রকাশিত: ০৫:০৬ পিএম, ২০ মার্চ ২০২২
কক্সবাজার সৈকতে ভেসে আসা মৃত মাছের উৎস নিয়ে ধূম্রজাল

মৃত তিমি ও বর্জ্যের পর এবার মরা মাছের ঢল দেখা গেছে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের কলাতলীতে। শনিবার (১৯ মার্চ) বিকেলে জোয়ারের ঢেউয়ে সৈকতের স্যান্ডি বিচ থেকে হ্যাচারি পয়েন্ট পর্যন্ত আধাকিলোমিটার এলাকায় এসব মৃত মাছ ভেসে আসে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তবে, কী কারণে এত মাছ একসঙ্গে মারা গেলো কিংবা কোথায় থেকে মাছগুলো আসলো তা কেউ নিশ্চিত করতে পারছেন না।

বালুচরে আটকে পড়া এসব মৃত মাছ কুঁড়াতে আশপাশের বাসিন্দারা বালিয়াড়িতে আসেন। তাদের সঙ্গে দর্শক হন পর্যটকরাও। অনেকে মরা মাছের এ ঢলের ছবি ও ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেড়ে দেন। পরে মরা এ মাছের উৎস নিয়ে ফেসবুকেও আলোচনা চলে।

দরিয়ানগর এলাকার বাসিন্দা আহমদ গিয়াস বলেন, বিকেলে হঠাৎ শুনতে পাই ঢেউয়ের সঙ্গে সামুদ্রিক এক প্রজাতির ছোট মাছ কূলে উঠে এসেছে। মৃত এ মাছগুলো কুড়াতে স্থানীয়রা ঝুড়ি নিয়ে সৈকতে আসেন। কলাতলীর বেলি হ্যাচারি থেকে স্যান্ডি বিচ পয়েন্ট পর্যন্ত মাছগুলো দেখা গেছে।

তিনি আরও বলেন, এর আগে মৃত তিমি উঠে আসতে দেখেছি। ঢেউয়ে ভেসে এসেছিল বিপুল পরিমাণ বর্জ্যও। কিন্তু একসঙ্গে এত সামুদ্রিক ছোট মাছ কেন মরলো তার কারণ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

কলাতলীর শুকনাছড়ি এলাকার জেলে মোহাম্মদ ওসমান বলেন, বিকেলের জোয়ারে ঢেউয়ের সঙ্গে হঠাৎ ছোট মরা মাছের ঢল তীরে আসে। মনে হচ্ছে, এক ধরনের জাল দিয়ে এ মাছ ধরা হয়েছে। কোনো ট্রলারে মজুত করা মাছগুলো যে কোনো কারণে মালিকদের হাতছাড়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সাগরে কোনো দূষণ হলে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ মরতো। এখানে কেবল এক প্রজাতির মরা মাছ এসেছে।

টুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ঢেউয়ের সঙ্গে মৃত মাছ ভেসে আসার খবর শুনলেও কোথা থেকে এসব মাছ ভেসে এসেছে তা জানা যায়নি। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটে জানানো হয়েছে।

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট কক্সবাজার কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শফিকুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে আমাদের একটা টিম সমুদ্র তীরে গিয়ে মৃত মাছগুলোর নমুনা সংগ্রহ করেছে। সেগুলো পরীক্ষা করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে মাছগুলোতে কোনো সমস্যা দেখা যায়নি। এরপরও ফলাফল হাতে এলে জানা যাবে কী কারণে মাছগুলো মরলো।

তবে, কক্সবাজার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা (ডিএফও) ড. মো. খালেকুজ্জামানের মতে, ফেসবুকে ঘোরা মরা মাছের এ দৃশ্যটি কলাতলী এলাকার নয়। কারণ সৈকতের যে পয়েন্টের কথা বলা হচ্ছে তা লোকারণ্য থাকে। আর সেখানে মাছ উঠলে একসঙ্গে অনেক স্থানীয় মাছ ধরতে আসতো। এখানে হাতেগোনা কয়েকজনকে দেখা গেছে। তাই এ চিত্রটি এখানকার বলে মনে হয় না। এরপরও আমার উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাকে সরেজমিন তদন্তের ভার দেওয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে বিষয়টি পরিষ্কার হবে।

এর আগে গতবছর সমুদ্র সৈকতের দরিয়ানগর ও হিমছড়ি সৈকত ভেসে এসেছিল কয়েকটি মৃত তিমি। আরও ভেসে এসেছিল কয়েক হাজার টন বর্জ্য।

সায়ীদ আলমগীর/এমআরআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।