শিক্ষার্থী-শিক্ষক নিহত: অনিশ্চিত ৪ শতাধিক শিক্ষার্থীর পড়াশোনা
মানিকগঞ্জের শিবালয়ে স্কুলের ভেতরে পিকআপচাপায় শিক্ষক-শিক্ষার্থী নিহতের পর থেকে তালা ঝুলছে আব্দুল আলীম মেমোরিয়াল স্কুলে। ঘটনার পর থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন প্রতিষ্ঠান প্রধান। স্কুলের কাছেও ভিড়ছে না শিক্ষকরা। এ অবস্থায় স্কুলটি আবার কবে চালু হবে সেটি জানা নেই কারও। এতে লেখাপড়া নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছেন চার শতাধিক শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে তালা ঝুলছে। ভেতরে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ পড়েছে। দেখে মনে হচ্ছিল পরিত্যক্ত কোনো বাড়ি। গেটের পাশেই এখনো রক্তের ছাপ লেগে আছে।
স্কুলের সামনে দাঁড়িয়ে কথা হয় দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাহিদা অক্তার রিয়ার সঙ্গে। সে জানান, করোনার ছুটি কাটিয়ে সবেমাত্র ক্লাস নিয়মিত শুরু হয়। কিন্তু একটি দুর্ঘটনায় স্কুল বন্ধ হয়ে গেছে। স্কুলটি চালু না হলে লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাবে।

রিয়ার সঙ্গে জড়ো হন আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী ও অভিভাবক। তারা বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে লেখাপড়ার মান ভালো ছিল। অল্পদিনেই বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠেছিল স্কুলটি। কিন্তু কর্তৃপক্ষের দায়িত্বজ্ঞানহীন কাণ্ডে শিক্ষিকা-ছাত্রীর মৃত্যু হলো। দুর্ঘটনার জন্য যাদের দায় রয়েছে তাদের শাস্তি চান সবাই।
শিবালয় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম ফারুক জানান, সরকারি কোনো অনুমোদন নেই প্রতিষ্ঠানটির। তারপরও স্থানীয়দের দাবি স্কুলটি পুনরায় চালুর। স্থানীয় প্রশাসন ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা নিয়ে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

জেলা প্রশাসন গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান মানিকগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (আইসিটি ও শিক্ষা) শুক্লা সরকার জানান, প্রত্যক্ষদর্শী, শিক্ষক, অভিভাবক ও স্থানীয় জনপ্রনিধিদের সঙ্গে কথা হয়েছে। দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়া হয়েছে।
এর আগে ২১ মার্চ (সোমবার) সকালে মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার টেপড়া এলাকায় আব্দুল আলিম মেমোরিয়াল স্কুলের ভেতরে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পিকআপচাপায় শিক্ষক ফাতেমা নাসরিন ও প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী জারিন তাসনিম নিহত হন। দুর্ঘটনায় আহত হন আরও পাঁচজন। ঘটনার পর থেকে গা ঢাকা দিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুলের মূল ফটকে ঝুলছে তালা।
বি.এম খোরশেদ/এমএস