অনাবৃষ্টিতে আমন ক্ষেত ফেটে চৌচির, পাট জাগ দেওয়া নিয়ে শঙ্কা
আষাঢ় শেষে শ্রাবণের তৃতীয় দিন চললেও তিন সপ্তাহ ধরে বৃষ্টি নেই নীলফামারীতে। প্রখর রোদে শুকিয়ে গেছে নদী-নালা, খাল-বিল ও জলাশয়। পানির অভাবে ব্যাহত হচ্ছে আমন ধান রোপণ। কিছু জায়গায় বিকল্প পদ্ধতিতে রোপণ করা গেলেও ফেটে চৌচির ক্ষেত।
অন্যদিকে পানি শুকিয়ে যাওয়ায় পাট জাগ দিতে পারছেন না কৃষকরা। পাট কাটলেও জাগ দিতে না পারায় জমিতে কিংবা রাস্তায় ফেলে রেখেছেন অনেকে। ফলে রোদে শুকিয়ে যাচ্ছে পাট গাছ।
তবে কৃষি বিভাগ বলছে, অনাবৃষ্টিতে পাটের তেমন ক্ষতি না হলেও সময় মতো আমন দান রোপণ করতে না পারলে ধানের ফলন ভালো নাও হতে পারে।

নীলফামারীর চওড়া এলাকার কৃষক রশিদুল বলেন, ‘২০ দিন আগে দুই বিঘা জমিতে ধান রোপণ করা হয়েছে। বৃষ্টি না হওয়ায় পানির অভাবে ক্ষেত ফেটে গেছে। ধান হলুদ বর্ণ ধারণ করেছে।’
কৃষক তফিজুল বলেন, ‘বিকল্প পদ্ধতিতে পানি দিয়ে বীজতলা তৈরি করা হলেও অনাবৃষ্টির কারণে জমিতে চাষাবাদ করা যাচ্ছে না। বৃষ্টিনির্ভর আমন ধান সময় মতো রোপণ করতে না পরলে ধানের সংকট দেখা দিতে পারে।’
বড় রাউতার কৃষক তাইজুল বলেন, ‘পানির অভাবে আমরা জমি এখনো চাষের উপযুক্ত করে তৈরি করতে পারিনি। আর এক সপ্তাহ বৃষ্টির দেখা না মিললে বীজতলাগুলো নষ্ট হয়ে যাবে। সেচ দিয়ে বোরো ধান আবাদ করলেও আমন ধান প্রকৃতির ওপরই নির্ভর করে। তাই বৃষ্টিই আমাদের ভরসা।’
নীলফামারী সদর উপজেলার পাট চাষি হামিদুর রহমান বলেন, ‘পাট গাছ প্রায় ১৫ দিন আগেই কাটা হয়েছে। খাল-বিল ও পুকুরে পানি না থাকায় গাছে জাগ দিতে পারছি না। এভাবে আর সপ্তাহ খানেক চললে ক্ষেতেই পাট গাছ নষ্ট হয়ে যাবে।’
সাংগলশী এলাকার তপন বলেন, ‘দুই বিঘা জমিতে পাট আবাদ করেছি ফলনও ভালো হয়েছে। এখন জাগ দেওয়া নিয়ে শঙ্কায় পড়ে গেছি।’

ডোমার পৌর সভার পাটচাষি বুলু বলেন, ‘চার বিঘা জমির সব পাট গাছ কেটে জমিতে ফেলে রাখা হয়েছে। এক বিঘা জমির পাট জাগ দিতে পারলেও পানির অভাবে বাকি তিন বিঘা জমির পাট কেটে ক্ষেতেই ফেলে রাখা হয়েছে।’
নীলফামারী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আবু বক্কর সিদ্দিক জাগো নিউজকে বলেন, আমন ধান বৃষ্টিনির্ভর। অনেক জায়গায় পানির অভাবে ক্ষেত ফেটে গেছে। সঠিক সময়ে এ ধান রোপণ করতে পারলে ফলন ভালো হয় না। তাই কৃষকদের শ্যালোমেশিন দিয়ে ধান রোপণ করতে পরামর্শ দিচ্ছি। তবে এ এলাকার কৃষকরা শ্যালো দিয়ে জমি চাষ করতে ততটা আগ্রহী নন।
পাটের কোনো অসুবিধা হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, পাট গাছ কেটে রাখা হলেও সমস্যা নাই। আবার জমিতে রেখে দিলেও নষ্ট হবে না। বৃষ্টি হলে খাল-বিলে পানি জমলে পাট গাছে জাগ দেওয়া যাবে।’
এসজে/এমএস