চাঁপাইনবাবগঞ্জে কুকুরের কামড়ে মরছে গরু-ছাগল

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি চাঁপাইনবাবগঞ্জ
প্রকাশিত: ০৫:৪৮ পিএম, ১২ অক্টোবর ২০২২

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ ও গোমস্তাপুরে বেড়েছে বেওয়ারিশ পাগলা কুকুরের উপদ্রব। এতে গরু, ছাগল ,হাঁস, মুরগি নিয়ে উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন এই দুই উপজেলার বাসিন্দারা।

মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে খোঁজ নিয়ে যানা যায়, গোমস্তাপুর ইউনিয়নের দোসিমানি কাঁঠাল, গোপালনগর, গুচ্ছগ্ৰাম ও জাহিদনগর এলাকায় শতাধিক পাগলা কুকুর ঘুরে বেড়াচ্ছে। এরা বাড়ির আশপাশে বেঁধে রাখা গরু-ছাগলকে কামড় দিচ্ছে। এতে এখন পর্যন্ত বেশ কয়েকটি গরু-ছাগল মারা যাওয়ায় এলাকাজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছে।

উপজেলার গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দা শাজাহান আলী বলেন, আট মাস আগে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে একটি গরু কিনেছিলাম। গরুটি গর্ভবতীও হয়েছিল। কিন্তু কয়েকদিন আগে পাগলা কুকুরের কামড়ে আমার সেই গাভিটি মারা গেছে। গাভিটি প্রায় প্রায় এক লাখ ২০ হাজার টাকা মূল্যের ছিল। এখন কীভাবে ঋণের টাকা শোধ করবো তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন পার করছি।

দোসিমানি কাঁঠাল গ্ৰামের রাজিব আলী বলেন, ১০ দিন আগে বাড়ির আঙিনায় খুঁটিতে আমার একটি গরু বাঁধা ছিল। বিকেলে হঠাৎ ৪-৫টি কুকুর গরুটিকে কামড় দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয় কবিরাজের থেকে অনেক ঝাড়ফুঁক দিয়েও ভালো হয়নি। গরুটি মারা গেছে। পশু হাসপাতাল জানালে তারা এসে গরুটির মাথা কেটে নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠিয়েছে। কিছু আর্থিক সহায়তা পেলে আমি ফের গরু কিনতে পারবো।

গোপালনগর গ্রামের ফিটু নামে এক বাসিন্দা বলেন, তিনদিন আগে আমার দুই ছাগলকে কুকুরে কামড় দিয়েছিল। একটি মারা গেছে। আর একটির চিকিৎসা চলছে। মনে হয় এটাও মারা যাবে।

জাহিদনগর এলাকার ফুলবতি নামে এক নারী বলেন, ২০ দিন আগে বাড়ির উঠানে বাঁধা গরুকে কুকুরে কামড় দিয়েছিল। পরে এলাকার কবিরাজ দিয়ে ঝাড়ফুঁক করিয়েও কোনো লাভ হয়নি, গরুটি মারা গেছে। আমার শেষ সম্বল ছিল গরুটি। এখন আমার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। আমার এক সন্তান আছে সেও প্রতিবন্ধী।

গোমস্তাপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. কাওসার আলী বলেন, উপজেলায় বেশকিছু গরুকে পাগল কুকুরে কামড় দিয়েছে। তবে ঠিক কতগুলো গরুকে কামড় দিয়েছে তার সঠিক সংখ্যা জানা নেই। আর যে গরুগুলো মারা গেছে সেগুলোর নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত গরু খামারিদের আর্থিক সহায়তা করা হবে।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, প্রতিবছর এসময় কুকুরগুলো বেওয়ারিশ হয়ে ওঠে। তবে এবার একটু বেশি। গোমস্তাপুরে কয়টা গরু মারা গেছে তার সঠিক সংখ্যা জানা নেই। তবে শিবগঞ্জে দুইটি গরু কুকুরের কামড়ে মারা গেছে বলে শুনেছি।

তিনি আরও বলেন, আগে আমরা এই ভোগান্তি থেকে বাঁচতে কুকুর নিধন করতাম। কিন্তু কুকুর নিধনে এখন তো নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তাই সবাইকে সর্তক থাকতে হবে।

সোহান মাহমুদ/এমআরআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।