চাঁপাইনবাবগঞ্জে এখনো মিলছে আশ্বিনা আম, মণ ১২ হাজার
আমের রাজধানীখ্যাত চাঁপাইনবাবগঞ্জে চার মাস আগেই শেষ হয়েছে মৌসুমি আম। তবে ব্যতিক্রমী এক পদ্ধতিতে জেলার গোমস্তাপুরে আব্দুল করিম নামে এক চাষির বাগানে এখনো দুলছে আশ্বিনা জাতের আম। এ আম দেখতে আসছেন অনেকে। বর্তমানে আশ্বিনা আম বিক্রি হচ্ছে ১০-১২ হাজার টাকা মণ।
গোমস্তাপুর উপজেলার শিমুলতলা এলাকায় আব্দুল করিমের বাগান। সরেজমিনে দেখা যায়, সারিসারি পেয়ারার গাছ। বাতাসে দুলছে হাজারো সুমিষ্ট পেয়ারা। একটু ভেতরে যেতেই চোখে পড়লো আশ্বিনা আমের গাছ। বাতাসে দুলছে আম। আমের পরিচর্যায় ব্যস্ত চাষি আব্দুর করিম।
তিনি বলেন, ১০ বছর থেকে আম ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। প্রথমে কয়েকবছর লাভবান হলেও পাঁচ বছর থেকে লোকসান গুনছি। তাই আম বাগানের জমিতেই পেয়ারা গাছ রোপণ করেছি। এই পেয়ারা বিক্রি করে ভালোই লাভ পাচ্ছি।
চাষি আব্দুর করিম বলেন, যেহেতু বাগানে আম গাছ আছে তাই মৌসুমে মুকুল আসে। সেসময় এবার আমের মুকুলগুলো ভেঙে দিয়েছিলাম কিন্তু পরিচর্যার কমতি রাখিনি। এবার আগস্ট মাসে হঠাৎ দেখি গাছগুলোতে মুকুল এসেছে। মুকুল দেখে পরিচর্যা আরও বাড়িয়ে দিই। কিছুদিন পরেই দেখছি, গাছে আম চলে এসেছে। এই আম বড় হয়ে এখন ১০-১২ হাজার টাকা মণ বিক্রি করছি।
তিনি বলেন, জেলার খুব অল্প স্থানে এই আশ্বিনা আম আছে। তাই আমাকে এই আম নিয়ে বাজারে জেতে হয় না। ক্রেতারা বাগানে এসে কিনে নিয়ে যান। আর একসঙ্গে আম ও পেয়ারার পরিচর্যা করতে পারায় খরচও কিছুটা কম হচ্ছে।
আব্দুর করিম আরও বলেন, এবার বুঝলাম, আশ্বিনা আমের সিজনাল মুকুল ভেঙে দেওয়া হলে এই সময়ে আম আসবে। তাই আমি উদ্যোগ নিয়েছি, আগামী বছর প্রায় ২০ বিঘা জমির আশ্বিনা আমের মুকুল ভেঙে দেবো, আর এসময় আম বিক্রি করবো।
হাসিব নামে এক কলেজছাত্র বলেন, এই নভেম্বর মাসে আশ্বিনা আম দেখে অবাক হয়ে গেছি। আমি জানতাম যে এসময় কাটিমন ও বারি-১১ জাতের আম পাওয়া যায়। তবে আশ্বিনা আমও পাওয়া যাচ্ছে শুনে দেখতে এসেছি।
গোমস্তাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তানভির আহমেদ সরকার বলেন, উপজেলার কিছু কিছু স্থানে এখনো আশ্বিনা আম পাওয়া যাচ্ছে। আমের সিজনাল সময়ে মুকুল ভেঙে দিয়ে বেশি পরিচর্যা করে এ আম ধরিয়েছেন চাষিরা। এটা উপজেলার জন্য অবশ্যই বাণিজ্যিক সম্ভাবনার।
তিনি বলেন, বর্তমানে আমের ভালো দাম পাচ্ছেন চাষিরা। তাই এভাবে যদি অসময়ে তারা আম ধরাতে পারেন তাহলে অনেক বেশি লাভবান হবেন।
সোহান মাহমুদ/এমআরআর/জেআইএম