প্রাইভেটের টাকা না দেওয়ায় পরীক্ষার হলে ২ ছাত্রীকে মারধর
লক্ষ্মীপুরে প্রাইভেটের টাকা না দেওয়ায় পরীক্ষার হলে দুই ছাত্রীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে সালমা আক্তার নামের এক মাদরাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
এ নিয়ে মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) বিকেলে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমরান হোসেন ও সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছে ভুক্তভোগী এক ছাত্রীর পরিবার।
খোজ নিয়ে জানা যায়, দুই ছাত্রীর মধ্যে একজন লক্ষ্মীপুর দারুল উলুম কামিল মাদরাসার (আলিয়া মাদরাসা) শিক্ষক সালমা আক্তারের কাছে প্রাইভেট পড়তো। তখন ১০ দিন পড়েই সে আর যায়নি। তবে ওই ১০ দিনের টাকা দিতে চাইলেও নেননি শিক্ষক।
মঙ্গলবার সকালে ওই ছাত্রী হাদিস বিষয়ে পরীক্ষা দিতে হলে আসে। এ সময় শিক্ষক সালমা ও আবদুল জলিল দায়িত্বে ছিলেন। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। হঠাৎ সালমার দৃষ্টি পড়ে ওই ছাত্রীর দিকে। এ সময় রাগান্বিত হয়ে তাকে সালমা বলেন, তুই তো আমার টাকা দিলি না। এ সময় তাকে গালমন্দও করেন। একপর্যায়ে তাকে চড়-থাপ্পড় দিতে থাকেন। পাশে থাকা আরেক ছাত্রীকেও সালমা চড়-থাপ্পড় মারেন।
এক ছাত্রী জানায়, ‘সবার সামনে শিক্ষক সালমা আমাকে চড়-থাপ্পড় মারেন। তিনি আমার মুখের হিজাব টেনে খুলে ফেলে। এ সময় তার নখ লেগে আমার মুখে আঘাত লাগে। কখনো মা-বাবা আমাকে মারেনি। আমার কিছু হলে এ মাদরাসা কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষক সালমা দায়ী থাকবেন। সবার সামনে আমাকে মারার ঘটনা লজ্জাজনক। কীভাবে আমি সবার সামনে মুখ দেখাবো?’
এ ছাত্রীর মা বলেন, ‘আমি এ ঘটনার সঠিক বিচার চাই। আমি ইউএনও ও সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। অপরাধ না করেও আমার মেয়ে মারধরের শিকার হয়েছে। এটি ন্যক্কারজনক ঘটনা।’
মারধরে শিকার আরেক ছাত্রীর বাবা বলেন, ‘মেয়েকে অন্যায়ভাবে শিক্ষক সালমা কয়েকটি থাপ্পড় দিয়েছেন। তাৎক্ষণিক আমার মেয়ে অধ্যক্ষের কাছে অভিযোগ করেছে। আমি প্রতিষ্ঠানের সভাপতি লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক আনোয়ার হোছাইন আকন্দের কাছে অভিযোগ দেবো।’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক সালমা বলেন, ‘মীম আমার কাছে ৫ মাস প্রাইভেট পড়েছে। হঠাৎ করে সে প্রাইভেট পড়া বন্ধ করে দেয়। সে আমার টাকাও দেয়নি। উল্টো সে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছিল। এজন্য তাকে চড়-থাপ্পড় দিয়েছি। এখানে দোষের কিছু নেই।’
মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা নেছার উদ্দিন জাগো নিউজকে লেন, ঘটনাটি ন্যক্কারজনক। শিক্ষকের এ কাণ্ড মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। শিক্ষক এ ধরনের ঘটনা ঘটাতে কোনোভাবেই পারেন না। মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সঙ্গে কথা বলে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোসলেহ উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, আহত এক ছাত্রী লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। ঘটনাটি খতিয়ে দেখে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক (ডিসি) আনোয়ার হোছাইন আকন্দ জাগো নিউজকে বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। খুবই দুঃখজনক। বিস্তারিত জেনে এ ঘটনায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কাজল কায়েস/এসজে/এএসএম