শেরপুর আওয়ামী লীগের সম্মেলন ঘিরে উৎসবের আমেজ

দীর্ঘ সাড়ে সাত বছর পর বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে শেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন। সম্মেলন ঘিরে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক প্রস্তুতি। শহর ছেয়ে গেছে তোরণ, ব্যানার আর ফেস্টুনে।
শহরের শহীদ দারোগ আলী পৌর পার্ক মাঠে চলছে সম্মেলনের সবশেষ প্রস্তুতি। সম্মেলনকে ঘিরে নেতাকর্মীদের মাঝে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। প্রায় ৫০ হাজার লোক সমাগমের পরিকল্পনা নিয়েছেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা।
জেলা আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী। সম্মেলনে দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের প্রধান অতিথি এবং যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবীর নানক, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম ও শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, সদস্য মারুফা আক্তার পপি ও রেমন্ড আরেং।
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করবেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হুইপ আতিউর রহমান আতিক। সঞ্চালনা করবেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট চন্দন কুমার পাল।
এবারের সম্মেলনে জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব কারা পাচ্ছেন তা নিয়ে চলছে নানা জল্পনা। পুরোনো নেতৃত্বই থাকছে, নাকি নতুন নেতৃত্ব আসছে, কিংবা পুরোনো নতুনের সমন্বয় হবে এমন প্রশ্ন সবার মাঝেই। সাবেক কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী ও জাতীয় সংসদের হুইপ আতিউর রহমান আতিকের মধ্যে গ্রুপিংয়ের কারণে গত নির্বাচন থেকেই চলছে দলীয় কোন্দল। তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটছে এবারের সম্মেলনে, এমনটাই মনে করছেন স্থানীয়রা।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০৩ সালে অনুষ্ঠিত জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে প্রত্যক্ষ ভোটে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন বর্তমান জাতীয় সংসদের হুইপ ও সদর আসনে টানা পাঁচবারের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আতিউর রহমান আতিক। সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন অ্যাডভোকেট চন্দন কুমার পাল। এর ১২ বছর পর অনুষ্ঠিত জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে টানা দ্বিতীয় দফায় আবারও সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদে মনোনীত হন ওই দুজনই। এবারের সম্মেলনকে ঘিরেও প্রকাশ্যে জোরালো তেমন কোন প্রার্থী না থাকলেও সম্প্রতি সভাপতি পদে নিজের প্রার্থিতা ঘোষণা করেন জেলা আওয়ামী লীগ থেকে অব্যাহতিপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীর রুমান। আর সাধারণ সম্পাদক পদে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট চন্দন কুমার পাল ছাড়া প্রার্থিতা ঘোষণা করেছেন সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ছানুয়ার হোসেন ছানু।
এছাড়া প্রার্থী হিসেবে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সমাজকল্যাণ সম্পাদক তাপস কুমার সাহার কিছু ব্যানার দেখা যাচ্ছে শহরে। তবে বর্তমান নেতৃত্বের বাইরে নতুন পদপ্রত্যাশীরা দল ও দলের তৃণমূলের নেতাকর্মীদের কাছে খুব একটা আবেদন সৃষ্টি করতে পারেননি।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক চন্দন কুমার পাল বলেন, সম্মেলনকে ঘিরে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে। সম্মেলনে প্রায় অর্ধলক্ষাধিক দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থক অংশ নেবেন বলে আশা করছি।
এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হুইপ আতিউর রহমান আতিক বলেন, মঞ্চ ও প্যান্ডেল তৈরিসহ সবধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। নেতাকর্মীদের মধ্যে ঈদের মতো উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে।
তবে জেলা আওয়ামী লীগ অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় আতিক-চন্দনের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
এসআর/জিকেএস