নেত্রকোনায় বাল্যবিয়ে দিয়ে কাজি-কনের বাবা গ্রেফতার
নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে বাল্যবিয়ে দেওয়ার অভিযোগে করা মামলায় কাজি ও কনের বাবাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতাররা হলেন, উপজেলার বড়তলী-বানিয়াহারী ইউনিয়নের সুখদেবপুর গ্রামের কাজি সাকিব আহমেদ (২৬) ও একই ইউনিয়নের বরুংকা গ্রামের কনের বাবা রাসেল চৌধুরী (৪৩)।
বুধবার (২১ ডিসেম্বরে) বিকেলে তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে। এর আগে মঙ্গলবার রাতে উপজেলার বড়তলী-বানিয়াহারী ইউনিয়নের বরুংকা গ্রামে এ বাল্যবিয়ের ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে সহকারী কমিশনার ভূমি মো. জাহাঙ্গীর আলম ও মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রুমানা রহমান পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজিকে আটক করে থানায় আনেন।
পরে বুধবার সকালে এ ঘটনায় উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা বাদী হয়ে কাজি সাকিব আহমেদ, কনের বাবা রাসেল চৌধুরী, বর মাহমুদুল হাসান (২৩) ও তার ভাই মাহবুব হাসানের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলার পরপরই দুপুরে কনের বাবা রাসেল চৌধুরীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে বর ও তার ভাই পলাতক রয়েছেন।
প্রশাসন ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে উপজেলার বরুংকা গ্রামে রাসেল চৌধুরীর মাদরাসা পড়ুয়া মেয়ের সঙ্গে পৌরশহরের দৌলতপুরের মাহমুদুল হাসানের বিয়ে দেওয়া হয়। খবর পেয়ে সহকারী কমিশনার ভূমি মো. জাহাঙ্গীর আলম ও মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রুমানা রহমান পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। সেখানে ঘটনার সত্যতা পেয়ে কাজি সাকিব আহমেদকে আটক করেন। পরে সকালে এ ঘটনায় কাজী, কনের বাবা, বর ও বরের ভাইসহ চারজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করা হয়। মামলার পর দুপুরে থানায় ডেকে এনে কনের বাবা রাসেল চৌধুরীকে গ্রেফতার করা হয়।
মোহনগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় করা মামলায় কাজি ও কনের বাবাকে গ্রেফতার করে বিকেলে আদালতে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদের ধরতে চেষ্টা চলছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ছাব্বির আহমেদ আকুঞ্জি বলেন, মঙ্গলবার রাতে বাল্যবিয়ের খবর পেয়েই সহকারী কমিশনার ও মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাকে ঘটনাস্থলে পাঠাই। সেখানে ঘটনার সত্যতা পাওয়ার পরই কাজিকে আটক করা হয়। সকালে অনেক তদবির হয়েছিল মামলা না করার জন্য। কিন্তু কোনোকিছুকেই পাত্তা দিইনি।
ইউএনও বলেন, অনেক কৌশলে বাল্যবিয়ে হয়ে যায়। সহজে ধরা যায় না। এবার যেহেতু হাতেনাতে ধরা হয়েছে। তাই এই শাস্তিটা উদাহরণ হয়ে থাকবে। শাস্তির ভয়ে এমন কাজ করতে আর সহজে কেউ সাহস পাবে না।
এইচ এম কামাল/এমআরআর/এএসএম