ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ছুরিকাঘাতে নিহত সাংবাদিকের দাফন সম্পন্ন

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ব্রাহ্মণবাড়িয়া
প্রকাশিত: ০৭:১৬ পিএম, ১০ জানুয়ারি ২০২৩

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সন্ত্রাসীদের ছুরিকাঘাতে নিহত সাংবাদিক ও স্বেচ্ছাসেবক আশিকুল ইসলাম আশিকের (২৭) দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) বাদ আসর আশিকের গ্রামের বাড়ি জেলার বিজয়নগর উপজেলার পত্তন ইউনিয়নের মনিপুর বন্দরবাজার সংলগ্ন গোরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

এরআগে, দুপুরে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল মর্গে আশিকের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। ময়নাতদন্তের পরপরই হাসপাতাল প্রাঙ্গণে আশিকের প্রিয় সংগঠন ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাতিঘরের সদস্যরা শেষ গোসল করান।

পরে শহরের ট্যাংকের পাড় মাঠে বাদ জোহর প্রথম জানাজা সম্পন্ন হয়। জানাজার আগে বক্তব্যে নিহত আশিকের বাবা আশরাফ উদ্দিন খুনিদের ফাঁসি দাবি করেন। জানাজায় ইমামতি করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাতিঘরের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম।

আরও পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ছুরিকাঘাতে সাংবাদিককে খুন

জানাজা শেষে এক হৃদয়বিদারক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। কান্নায় ভেঙে পড়েন আশিকের সংগঠন ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাতিঘরের সদস্যরা।

Lash-(4).jpg

ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাতিঘর সংগঠনের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম বলেন, আমাদের সংগঠন প্রতিষ্ঠার পর একমাত্র আমরাই জেলার সব অজ্ঞাতপরিচয় উদ্ধার হওয়া মরদেহ কবর দিয়ে আসছি। এ পর্যন্ত আমরা এরকম শতাধিক ব্যক্তিকে কবর দিয়েছি। পাশাপাশি রক্তদান তো নিয়মিত বিষয়। প্রতিটি কাজেই আশিক সক্রিয় ছিলেন। অথচ আমাদের সংগঠনের মিটিং শেষে ফেরার পথে তাকে হত্যা করা হলো।

পরে আশিকের মরদেহ তার গ্রামের বাড়ি বিজয়নগর উপজেলার পত্তন ইউনিয়ন মনিপুর গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে স্থানীয় বন্দরবাজার এলাকায় বালুর মাঠে আশিকের শেষ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

জানাজার আগে আশিকের বাবা আশরাফ উদ্দিন ও পত্তন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম বক্তব্য রাখেন। তারা খুনিদের ফাঁসি দাবি করেন। পরে মাঠের পাশেই কবরস্থানে আশিককে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়।

আরও পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সাংবাদিক খুনের ঘটনায় মামলা, গ্রেফতার ২

Lash-(2).jpg

ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাতিঘরের সভাপতি আজহার উদ্দিন বলেন, আশিক সাংবাদিকতার পাশাপাশি ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাতিঘর সংগঠনের সক্রিয় সদস্য ছিলেন। অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির মরদেহ দাফন ও রক্ত দেওয়ায় আশিক সবসময় সামনের সারিতে থাকতেন। সোমবার (৯ জানুয়ারি) বিকেলে শহরের অবকাশ পার্ক আমাদের সংগঠনের মাসিক সভা ছিল। সভা শেষে আমরা দুটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও রিকশাযোগে ফিরছিলাম। আশিক আমার অটোরিকশার পেছনে একটি রিকশায় ছিলেন।

তিনি বলেন, কিছুদূর যাওয়ার পর পাবলিক লাইব্রেরির সামনে রায়হান নামের একজনসহ আরও কয়েকজন দৌড়ে এসে আশিকের শরীরে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক আশিককে মৃত ঘোষণা করেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সোহরাব আল হোসাইন জানান, আশিককে হত্যায় অভিযুক্ত রায়হান মিয়া ওরফে সোহান ও সাফিন আহমেদ জুনায়েদকে রাতেই গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ঘটনায় আশিকের বাবা বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেছেন। বাাকি আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।

আবুল হাসনাত মো. রাফি/এসআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।