আশ্রয়ণের ঘরে পিঠা বানিয়ে ভাগ্য বদলেছেন রিনা

আয়শা সিদ্দিকা আকাশী
আয়শা সিদ্দিকা আকাশী আয়শা সিদ্দিকা আকাশী , জেলা প্রতিনিধি মাদারীপুর
প্রকাশিত: ০৪:৩৩ পিএম, ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

অডিও শুনুন

নিজের কোনো ঘর ছিলো না রিনা বেগমের। কখনো সামান্য কিছু টাকায় শহরে বাড়িভাড়া নিয়ে আবার কখনো অন্যের বাড়িতে আশ্রয়ে থেকেছেন তিনি। কিন্তু এক বছর তিন মাস আগে ভাগ্য পরিবর্তন হয় তার। মাদারীপুর মস্তফাপুরের খৈয়রভাঙ্গা গ্রামে মুজিববর্ষে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার পুনর্বাসনের একটি সরকারি ঘর পান তিনি।

সেই ঘরেই নতুন করে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখছেন রিনা বেগম। সরকারি ঘরের সামনেই মাটির চুলায় পিঠা বানিয়ে বিক্রি করছেন। আয়ও হয় বেশ ভালো।

আরো পড়ুন- পৌরসভার ময়লায় বিপর্যস্ত ইউনিয়নবাসীর জীবন

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রিনা বেগমের বয়স প্রায় ৬০ বছর। স্বামী জলিল ফকির। তিনিও বৃদ্ধ হয়ে গেছেন। দুই মেয়ের বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর মেয়েরা তাদের স্বামীর বাড়িতেই থাকেন। এরপর স্বামী-স্ত্রী যখন যেখানে সুবিধা পেয়েছেন, সেখানেই থেকেছেন। নিজেদের একটি ঘর হবে তা কখনো চিন্তাও করেননি।

থাকার জন্য ঘর পেলেও দু’বেলা খাবারের জন্য জলিল ফকির এই বয়সেও যখন যে কাজ পান তাই করেন। কিন্তু তাতেও তাদের সংসারে অভাব লেগেই থাকে। তাই শীত এলেই রিনা বেগম নেমে পড়েন পিঠা বানাতে। প্রতিদিন দুপুরের পরই ঘরের সামনেই মাটির চুলা জ্বালিয়ে লোহার কড়াইতে ভাজেন চিতই পিঠা। সঙ্গে থাকে সরিষা, ধনিয়াপাতা ও সুটকি ভর্তা।

jagonews24

প্রতিপিস পিঠা বিক্রি করেন ১০ টাকা করে। প্রতিদিন আড়াইশ থেকে ৩০০ টাকার পর্যন্ত পিঠা বিক্রি হয় তার। খরচ কম, লাভ বেশি। তাই শীত এলেই পিঠা বানিয়ে বিক্রি করে যে টাকা পান তা দিয়ে সংসারের কিছুটা খরচ যোগান করেন।

আরো পড়ুন- নষ্ট হচ্ছে লাখ লাখ টাকার যন্ত্রপাতি, বিদ্যুৎ গেলে ভরসা মোমবাতি

রিনা বেগম বলেন, কখনো ভাবিনি নিজের একটি ঘর হবে। সেই ঘরে আমি ও আমার স্বামী থাকতে পারবো। নিজের ঘর আমার কাছে স্বপ্ন ছিলো। সেই স্বপ্ন পূরণ করেছে আমাদের সরকার। নিজের ঘরের সামনে বসেই আমি আয় করছি। এতে করে আমার সংসারের কিছুটা হলেও সহযোগিতা হচ্ছে। বিকেল হলেই আমার পিঠা এই প্রকল্পের মানুষসহ আশপাশের মানুষজন এসে কিনে নিয়ে যায়। এতে আমি খুব খুশি।

মাদারীপুর মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক মাহমুদা আক্তার কণা বলেন, বর্তমানের নারীরা ঘরে বসে অলস সময় কাটাতে চান না। তারা কিছু একটা কাজ করে সংসারের জন্য আয় করতে চান। তেমনই একজন রিনা বেগম। তিনি এই বয়সেও পিঠা বিক্রি করে আয় করছেন।

আরো পড়ুন- এক ঘরে তিন প্রজন্মের ঠাসাঠাসি করে বসবাস

মাদারীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাইনউদ্দিন বলেন, রিনার মতো হাজারো নারীকে প্রধানমন্ত্রী ঘর দিয়েছেন। ঘর পেয়ে সেসব নারীরা নিজের অবস্থান তৈরি করছেন।

এফএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।