ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একমাস ধরে নেই শিশুদের ইপিআই টিকা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ব্রাহ্মণবাড়িয়া
প্রকাশিত: ১০:২৬ এএম, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
শিশুদের শুধু প্রথম ধাপের বিসিজি টিকা দেওয়া হচ্ছে

জন্মের পর শিশুদের ধাপে ধাপে দেওয়া সম্প্রসারিত টিকা দান কার্যক্রমের (ইপিআই) টিকা গত এক মাস ধরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কোথাও নেই। ফলে কেন্দ্র এসেও সন্তানদের নিয়ে ফিরে যাচ্ছেন মায়েরা। একাধিকবার এসেও টিকা না পাওয়ায় তাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানায়, ইপিআই কর্মসূচিতে শিশুদের রোগ প্রতিরোধযোগ্য বিভিন্ন ধাপে টিকা দেওয়া হয়। এর মধ্যে আছে যক্ষ্মা, পোলিও, ডিফথেরিয়া, হুপিং কাশি, ধনুষ্টংকার, হেপাটাইটিস-বি, হিমোফাইলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা-বি জনিত রোগ, হাম, নিউমোকক্কাল জনিত নিউমোনিয়া, রুবেলা। সময়সূচি অনুযায়ী টিকা না নিলে শিশুর শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হবে না।

শিশু জন্মের পর প্রথম বিসিজি টিকা দিতে হয়। বয়স ছয় সপ্তাহ হলে আইপিভি টিকার প্রথম ডোজ ও ১৪ সপ্তাহে দ্বিতীয় ডোজ দিতে হয়। একই সময় পেন্টাভ্যালেন্ট (ডিপিটি, হেপাটাইটিস-বি, হিব), ওপিভি এবং পিসিভি টিকার প্রথম ডোজ দিতে হয়। কমপক্ষে চার সপ্তাহর ব্যবধানে এ সব টিকার দ্বিতীয় ও তৃতীয় ডোজ দিতে হয়। শিশুর ২৭০ দিন পূর্ণ হলেই এমআর (হাম ও রুবেলা) টিকার প্রথম ডোজ এবং ১৫ মাস হলেই দ্বিতীয় ডোজ দিতে হয়।

কিন্তু ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গত একমাস ধরে বিসিজি টিকা ছাড়া শিশুদের কোনো টিকা মজুত নেই। ফলে শিশুদের সময় অনুযায়ী টিকাগুলো দেওয়া যাচ্ছে না।

শনিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, ইপিআই টিকা কেন্দ্রে স্টাফরা অলস সময় পার করছেন। মাঝে মধ্যে বিসিজি টিকা দিতে নবজাতকদের নিয়ে মায়েরা আসছেন। তাদের টিকা দেওয়া হচ্ছে। তবে দ্বিতীয় ধাপে টিকাগুলো দিতে আসা শিশুদের অভিভাবকদের ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

টিকার জন্য সন্তানকে কেন্দ্রে নিয়ে আসেন আসমা বেগম। তিনি বলেন, ‘আমার বাচ্চার তৃতীয় ধাপের টিকা দেওয়ার সময় ছিল ১৫ ফেব্রুয়ারি। সেদিন আসার পর জানানো হয়েছিল টিকা নেই। কয়েকদিন পর আসবে। আজকে আসার পর টিকা কেন্দ্র থেকে একই কথা বলে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।’

নাজনীন বেগম নামের আরেক নারী বলেন, ‘আমার সন্তানের প্রথম টিকা দিয়েছিলাম ২৮দিনের মাথায়। আজকে ছিল দ্বিতীয় ডোজের তারিখ। কিন্তু টিকা না থাকায় পরে আসতে বলেছে।’

এ বিষয়ে জেলার ইপিআই সুপারিন্টেনডেন্ট আমিনুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একবছরে ৯১ হাজার শিশুকে টিকা দিয়ে থাকি। জেলার ৯৮টি ইউনিয়নের প্রতিটিতে ২৪টি কেন্দ্রে মাসে একবার করে টিকা দেওয়া হয়। এছাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও জেলা সদর হাসপাতালে ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন টিকা দেওয়া হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের প্রতি তিন মাস পর পর টিকা পাঠানো হয়। এতদিন ঢাকাতেই টিকা ছিল না। আমরা কিছুদিনের মধ্যে টিকা পেয়ে যাবো।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিভিল সার্জন মোহাম্মদ একরাম উল্লাহ জাগো নিউজকে বলেন, টিকার জন্য আমরা চাহিদা পাঠিয়েছি। যেন দ্রুত টিকা আসে, চেষ্টা করে যাচ্ছি।

আবুল হাসনাত মো. রাফি/এসজে/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।