ভুল চিকিৎসায় মৃত্যুর পর মরদেহ আইসিইউতে পাঠানোর অভিযোগ
ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় ইশতিয়াক আহমেদ ইকরাম (২২) নামে তরুণের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (১৮ মার্চ) সকালে জেলা শহরের পুরাতন জেল রোডের আল খলিল হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে।
ইশতিয়াক সদর উপজেলার বুধল ইউনিয়নের চান্দিয়ারা গ্রামের শহীদ উদ্দিনের ছেলে। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর ডিগ্রী কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন।
এই ঘটনায় হাসপাতালের মালিকের ভাইসহ তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। আটকরা হলেন, হাসপাতাল মালিকের ভাই এমদাদুল বশির জয়, হাসপাতাল স্টাফ নাজমুল হক ও আরিফুল ইসলাম।
এদিকে মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষোভ করে হাসপাতাল ভাঙচুর করেন ইশতিয়াকের স্বজন ও সহপাঠীরা। পরে দুপুর ১টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেন তারা। এ সময় বক্তব্য রাখেন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাসুম বিল্লাহ, জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ওবায়দুল হক বাবু, ইশতিয়াকের বন্ধু মাহমুদুল হাসান ও মুস্তাকিম খান হিমেল প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা দাবি করেন, ভুল চিকিৎসায় ইশতিয়াক অপারেশনের পরপরই মারা গেছেন। তারপরও তার মরদেহ আইসিইউতে পাঠানো হয়েছে। শুধু লোক দেখাতে এবং অতিরিক্ত বিল করার জন্য তার মরদেহ আইসিইউতে পাঠায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ৷ আমরা এই ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
মৃতের স্বজনরা জানিয়েছেন, শুক্রবার সকালে ইশতিয়াককে নাকের পলিপাস অপারেশনের জন্য আল খলিল হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি করা হয়। এরপর দুপুরে তাকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়ার পর তার আর জ্ঞান ফেরেনি। পরে তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আইসিইউ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে শনিবার সকালে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
ইশতিয়াকের চাচা আইনজীবী শামছুল ইসলাম জানান, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে তার অপারেশন করেছেন ডা. রাফিউল আলম। কিন্তু রাফিউল জানিয়েছেন তিনি অপারেশন করেননি। ইশতিয়াকের সঠিক চিকিৎসা হয়নি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলা এবং ভুল চিকিৎসায় তার মৃত্যু হয়েছে।
নাক, কান ও গলা চিকিৎসক রাফিউল আলমের মুঠোফোনে কল দেওয়া হলে তিনি রিসিভ করেননি।
তবে হাসপাতালের মালিক খলিল বশির মানিক দাবি করেন, অপারেশন ডা. রাফিউল আলমই করেছেন। তার সিসিটিভি ভিডিও ফুটেজ আমাদের কাছে আছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমরানুল ইসলাম জানান, এই ঘটনায় ইশতিয়াকের ভাই বাচ্চু মিয়া বাদী হয়ে হাসপাতালের মালিক খলিল বশির মানিক, ইএনটি চিকিৎসক রাফিউল আলম ও অ্যানেস্থেশিয়া চিকিৎসক ফৌজিয়া মমতাজ সুপ্তিকে আসামি করে মামলা জমা দিয়েছেন। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
আবুল হাসনাত মো. রাফি/এফএ/জেআইএম