যশোর
‘সবজির দাম একটু বেশি, বিক্রি নেই’

রমজান ঘিরে যশোরে সবজির বাজার চড়া। তবে কৃষকের ঘরে সে সুফল পৌঁছাচ্ছে খুব কমই। এ অঞ্চলের কৃষক থেকে কেনার পর আড়ত ঘুরে খুচরা বাজারে দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে বেগুন, পটোল, কাঁচামরিচ ও টমেটো। মধ্যস্বত্বভোগীদের হাত ঘুরে রাজধানী ঢাকার বাজারে এই সবজির দাম শতকের ঘরে ঘুরছে। ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় বাজারে কমেছে ক্রেতাও।
কৃষি সংশ্লিষ্টরা জানান, রমজান মাস ঘিরে বরাবরই বাজারে চড়াভাব বিরাজ করে। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। বাজারে বাড়তি দামে সবজি বিক্রি হলেও কৃষকের ঘরে এর সুফল খুব কমই পৌঁছায়। কিন্তু মধ্যস্বত্বভোগীদের নিয়ন্ত্রণহীন বাণিজ্যের কারণে ভোক্তা পর্যায়ে সবজির মূল্য যেন আকাশ ছুঁয়েছে। এতে ক্রেতাদের নাভিশ্বাস উঠছে।
যশোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, যশোরের আট উপজেলায় ৩০ হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে সবজি চাষ হচ্ছে। এসব জমিতে কৃষকরা বিভিন্ন সবজি আবাদ করেন। জেলায় মৌসুমে দুবার সবজির আবাদ হয়।
যশোরের সবজিজোনখ্যাত সাতমাইল বারীনগর, খাজুরা বাজার এবং এবং শহরের বড় বাজার ও রেলবাজার ঘুরে দেখা গেছে, কৃষক ক্ষেত থেকে তুলে পাইকারি বাজারে বেগুন ৩৫-৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন। আড়ত থেকে সেই বেগুন ৪৫-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বাজারে ক্রেতা সেই বেগুন কিনছেন ৭০-৮০ টাকা। একইভাবে কৃষকের ৪০ টাকার পটোল পাইকাররা বিক্রি করছেন ৪৫-৫০ টাকায় আর খুচরায় ক্রেতারা কিনছেন ৬০-৬৫ টাকা দরে।
আকারভেদে কৃষক প্রতিটি লাউ ২০-৩০ টাকা পেলেও আড়ত ঘুরে খুচরা বিক্রি ৪৫-৫০ টাকা। কৃষকের ৪৫-৫০ টাকার ঢ্যাঁড়স খুচরা বাজারে ৮০-১০০ টাকা, ৪৫-৫০ টাকার কাঁচামরিচ ৮০-১২০, ১০-১২ টাকা কেজি টমেটো খুচরা বাজারে ২০-৩০, ৪০-৪৫ টাকার শসা খুচরায় ৮০, ২০-২৫ টাকা হালি লেবু খুচরা বিক্রি হচ্ছে ৩০-৫০ টাকা দরে। তবে বাজার ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় চাহিদা তুলনামূলক কম বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।
যশোর সদর উপজেলা বীর নারায়ণপুর গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বাজারে দাম ভালো হলেও চাহিদা কম। রমজান উপলক্ষে বাজারে সবজির বাড়তি চাহিদা নেই। খুচরা বাজারে দাম বেশি হলেও কৃষকের কাছে তা পৌঁছাচ্ছে না।’
পৌর শহরের রেলবাজার এলাকার সবজি বিক্রেতা নূর ইসলাম বলেন, ‘বাজারে সবজির দাম একটু বেশি। তবে প্রতি বছর রমজানের আগে যেভাবে বেচাবিক্রি হতো, এবার তেমনটা নেই। সবাই কিনছেন কম।’
পৌর শহরের চাঁচড়া এলাকার বাসিন্দা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ওয়াসিম হোসেন বলেন, ‘বাজারের যে পরিস্থিতি তাতে বেশি কেনার সুযোগ নেই। সাধ্যের মধ্যে অল্প অল্প করে কিনেই সংসার চালাতে হচ্ছে।’
এসজে/জিকেএস